তিন প্রার্থীছ: উজ্জ্বল বিশ্বাস (তৃণমূল), মহাদেব সরকার (বিজেপি) এবং সুমিত বিশ্বাস (সিপিএম)।
কেউ অন্য দলে নাম লিখিয়েছেন, কেউ বা অন্য দলের প্রার্থী হয়েছেন, কেউ বা দলে থেকেই বেসুরো গাইছেন— এমন একঝাঁক জেলা পরিষদ সদস্য, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, দলের নেতাকে শো-কজ করল তৃণমূল। রবিবার বিকেলে বহরমপুরে দলের জেলা অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান তাঁদের শোকজ করার কথা বলেছেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক উত্তর না পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে দল কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
কিন্তু যাঁরা অন্য দলে গিয়েছেন তাঁদের কী করে শো-কজ করল তৃণমূল সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অন্য দলে যাওয়া লোকজনকেও শোকজ কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে আবু তাহের বলেন, ‘‘এরা দল ছাড়ার কথা আমাদের জানাননি। এছাড়া অন্য দলে গিয়ে ফের তৃণমূলে ফিরতে চেয়েছেন এমনও রয়েছে। ফলে আমাদের দলের যে সব সদস্যরা দল বিরোধী কাজ করছেন তাঁদের শো-কজ করা হল। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বেলডাঙা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ভরত ঝাওর বলেন, ‘‘যে দলে থেকে দল বিরোধী কাজ করে তাঁকে শো-কজ করা যায়। কিন্তু আমি তো এক মাস আগেই দল ছেড়ে দিয়েছি। সেখানে এই শো-কজের কী মূল্য রয়েছে।’’ একই বক্তব্য রঘুনাথগঞ্জের জেলা পরিষদ সদস্য নাসির শেখের। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল আবার আমাকে শো-কজ করবে কী করে? আমি তো প্রকাশ্যে তৃণমূল ছেড়ে দিয়েছি।’’
জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস বলেন, ‘‘ভুল করে দল ছেড়েছিলাম সে কথা জানিয়ে তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে আগেই চিঠি দিয়েছি।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস, জেলা পরিষদের দুই কর্মাধ্যক্ষ মইদুল ইসলাম, আনারুল হক, জেলা পরিষদ সদস্য নাসির শেখ, রাফিকা সুলতানা, দ্রোপদী ঘোষ, সীমা চৌধুরী, বেলডাঙা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ভরত ঝাওর, বড়ঞার তৃণমূল নেতা ষষ্ঠী মাল, জলঙ্গির তৃণমূল নেতা আরিফ বিল্লা, জলঙ্গির সাদিখাঁরদিয়াড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাসেদা বিবি,
খয়রামারির প্রধান সেলিনা বিবি, সুতি-২ ব্লকের বহুতালির প্রধান আব্দুল শেখ ও অরঙ্গাবাদ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান এলিমা হোসেন দল বিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে তৃণমূল চিহ্নিত করেছে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের ফোন করে, বৈঠকে ডেকে দল বিরোধী কাজ থেকে সরে আসার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কথা না শোনায় এবারে শোকজ করা হল।
সূত্রের খবর, বৈদ্যনাথ দাস, জেলা পরিষদ সদস্য দ্রোপদী ঘোষ তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। মোহভঙ্গ হতেই বৈদ্যনাথ ফের তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন।