রুকবানুর রহমান, কল্যাণ নন্দী এবং কাঞ্চন মৈত্র।
ওই যে কাটমানি!
সাইকেলে যেতে যেতে কথাটা শুনে ঘুরে দাড়ালেন হাফ গেঞ্জি আর লুঙ্গি পড়া তরুণ।
কৃষ্ণনগর-করিমপুর রোড থেকে যে রাস্তা চলে গিয়েছে তিলকপুরের দিকে, তার ধারে বসে থাকা জনা কয়েকের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললেন, “তোদের দাদা এখন দলের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হয়ে কি সাধু সাজছে নাকি?” আড্ডা থেকে এক জন বললেন, “ওর দাদাকে তো বেরিয়ে যেতেই বাধ্য করা হল নাকি?” সাইকেলে হেলান দিয়ে বসে থাকা মধ্যবয়স্ক ফুট কাটলেন, “যুদ্ধ এ বার ঘরের দাদা বনাম বাইরের দাদা!”
বেলা ১০টা। রোদের তেজ বাড়ছে। সীমান্ত লাগোয়া চাপড়ায় বিভিন্ন ভোটে যিনি তৃণমূলের হয়ে দাপটে ভোট করিয়েছেন, সেই জেবের শেখ দলের টিকিট না পেয়ে এ বার ‘নির্দল’ প্রার্থী। তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএমের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই তাঁর প্রচার চারদিকে। প্রতীক ফুটবল। শ্রীনগর মোড়ে এক চায়ের দোকানে বসে এক যুবক বলেই ফেললেন, “খেলা হবে বলে লাফাচ্ছিস, বল তো জেবের ভাইয়ের পায়ে।”
পাশের যুবকের পাল্টা, “পায়ে বল থাকলেই তো থেলা হয় না, গোল করাটাও জানতে হয়। রুকবানুর ভাই দু’বারের এমএলএ, সেটা কি এমনি এমনি?” বাস ধরতে আসা এক জন বললেন, “জেবের ভাই বলেছিল, লোকসভা ভোটে চাপড়া থেকে ৫০ হাজারের লিড দেবে। সেই কথা কিন্তু রেখেছিল।” দ্বিতীয় জনের জবাব, “তাতে কি বিধায়কের কোনও হাত ছিল না?” প্রথম জনের পাল্টা, “হাত কত দূর, এ বারের ভোটে প্রমাণ করে দিক না!”
প্রার্থী নিয়ে স্বস্তিতে নেই সংযুক্ত মোর্চাও। আইএসএফের প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ নানা মহলে রয়েছে, উল্টে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএমও। সীমানগরের কাছে ন’মাইলে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রোডের ধারে আড্ডায় শোনা গেল, “সিপিএম এখানে খারাপ কিছু করবে না। কিন্তু আব্বাসের দলের সঙ্গে জোটটা হল না।” পাশ থেকে জবাব এল, “আব্বাস তো নতুন এল, এত দিন কোথায় ছিল। তবে সিপিএমের কি আর সেই শক্তি আছে?”
মহতপুরে গলায় দড়ি বাসস্ট্যান্ডের কাছ দিয়ে চলে যাচ্ছে শেষ দিনে তৃণমূলের প্রচার— মাইকে প্রবল জোরে ‘খেলা হবে’। পাশের চায়ের দোকানে আক্ষেপ শোনা যায়, “জেবের তো হারাতে নেমেছে তৃণমূলকে, যে দলটা নিজে এত দিন করে এল!”
গত কয়েক বছরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল, বোমাবাজি, খুন জখমের ঘটনার সঙ্গে চাপড়ার নাম জড়িয়েছে বারবার। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের স্মৃতি টাটকা এখনও। দইয়ের বাজারে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করেন এক মধ্যবয়স্ক, “তৃণমূল ফের রুকবানুরকে প্রার্থী করার পরে জেবেরের লোকজন কি আর ওর হয়ে ভোটটা করাত? দলের বাইরে চলে যাওয়ায় আর যাই হোক পিছন থেকে ছুরি মারা যাবে না।”
পাশের সঙ্গী ঠেলা দেন, “টিএমসি-র সংগঠন আসলে কার হাতে, তারও পরীক্ষা হয়ে যাবে যাবে এ বার।”
জাহাঙ্গীর বিশ্বাস এবং জেবের শেখ।
গত কয়েক বছরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল, বোমাবাজি, খুন জখমের ঘটনার সঙ্গে চাপড়ার নাম জড়িয়েছে বারবার। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের স্মৃতি টাটকা এখনও। দইয়ের বাজারে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করেন এক মধ্যবয়স্ক, “তৃণমূল ফের রুকবানুরকে প্রার্থী করার পরে জেবেরের লোকজন কি আর ওর হয়ে ভোটটা করাত? দলের বাইরে চলে যাওয়ায় আর যাই হোক পিছন থেকে ছুরি মারা যাবে না।”
পাশের সঙ্গী ঠেলা দেন, “টিএমসি-র সংগঠন আসলে কার হাতে, তারও পরীক্ষা হয়ে যাবে যাবে এ বার।”