ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগের এক সংঘর্ষের স্মৃতি বিধানসভা ভোটের আগে শনিবার উস্কে দিয়ে ‘বিতর্কে’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে ২০১৮-র মার্চে ওই সংঘর্ষে সন্তান হারিয়ে যে ইমাম শান্তি বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন, আসানসোলের নুরানি মসজিদের সেই ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদি এ দিনও বলেছেন, ‘‘সে প্রসঙ্গ আর না তোলাই ভাল। ভারতবাসীর শক্তি হল, সম্প্রীতি ও একতা। তাকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত।’’
পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার নিঘার জনসভা থেকে এ দিন প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, ‘‘তিন বছর আগের রামনবমী মনে আছে? আসানসোল-রানিগঞ্জের দাঙ্গা কে ভুলবে? অনেকের সারা জীবনের সঞ্চয় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সব থেকে ক্ষতি হয়েছিল গরিবের, দোকানদারদের। দাঙ্গাকারীদের সঙ্গ কে দিয়েছিলেন? তুষ্টিকরণের নীতি কে নিয়েছেন? কার জন্য পুলিশ দাঙ্গাকারীদের পক্ষে ছিল? একটাই জবাব। সবাই বলছে, ‘দিদির (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কারণে’।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায়ের পাল্টা জবাব, ‘‘দাঙ্গার কথা বলতে হলে, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদীর গুজরাতের ঘটনা থেকে শুরু করা উচিত ছিল। আসানসোলে বিজেপি দাঙ্গা-পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন তা রুখে দিয়েছিল। বাংলার মাটিতে দাঙ্গা হয় না। হবে না।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই সংঘর্ষ শুরু হয় রানিগঞ্জে। পরে, তা আসানসোলের কিছু এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তাতে ছেলে, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সিবতুল্লাকে হারান ইমাম রশিদি। তিনি এ দিনও বলেছেন, ‘‘অতীত মনে রেখে লাভ কি?’’
তৃণমূলের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপির তাবড় নেতারা অতীত উস্কে বিভাজনের রাজনীতি করতে চাইছেন। ঘটনাচক্রে, এ দিন আউশগ্রামের সভায় দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘‘এখানে তিন ধরনের মানুষ দেখা যায়। এক, অনুপ্রবেশকারী, যাঁরা ‘দিদি’র প্রাণের চেয়েও প্রিয়। দ্বিতীয়, আমার-আপনার মতো নাগরিক, যাঁদের উৎসব করতে হলে আদালতে যেতে হয়। দুর্গা-সরস্বতী পুজো করতে হলে অনুমতি মেলে না। তৃতীয়, শরণার্থী, যাঁরা নাগরিকত্ব পান না।’’ তাঁর
সংযোজন: ‘‘২ মে বিজেপির সরকার বানান। কারও দুর্গা পুজো, সরস্বতী পুজো বন্ধ করার সাহস হবে না।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপি নেতৃত্ব দেশ জুড়ে বিভাজনের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেন। এটাই আসলে ওঁদের ভোট-কৌশল। কিন্তু আসানসোলের মানুষ খারাপ অতীতকে মনে রাখেন না।’’