‘অশালীন’, বলছেন বিশিষ্টরা
Narendra Modi

Bengal polls: ‘দিদি, ও দিদি’ সুর করে ডেকে গর্বিত মোদী

বাংলা থেকে কেউ এক জন আমাকে একটি ভিডিয়ো হোয়াটসঅ্যাপ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।

‘দিদি, ও দিদি...’। দীর্ঘ সুর টানা এই আহ্বান কার উদ্দেশে কার, রাজ্যবাসীর এখন তা জানা হয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদীর এই সম্ভাষণ নিয়ে বিতর্ক এবং সমালোচনাও তুঙ্গে। এমনকি, একটি গণ সংগঠনের তরফে কলকাতার একটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে বলা হয়েছে, যে সুরে ‘দিদি’ ডাকা হচ্ছে, তাতে ‘ইভ টিজিং’ উৎসাহ পেতে পারে।

Advertisement

বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতাও। কারণ, এ ক্ষেত্রে দেশের প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বয়ং তাঁর প্রতিটি বক্তৃতায় মমতা কে ‘দিদি, ও দিদি’ বলে প্রলম্বিত সুরে সম্বোধন করে আক্রমণ শানাচ্ছেন। এই ধরনের ‘নাটকীয়’ আহ্বান কী ব্যঞ্জনা বহন করে? নাট্যজগতের একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি এক বাক্যে বলেছেন, এই বাচনভঙ্গি ‘শ্লেষ’ ছাড়া আর কিছু নয়। মোদী অবশ্য সোমবার বারাসতে তাঁর ‘ও দিদি’ ডাকের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘আমি এই যে ‘দিদি, ও দিদি’ বলি, এতেও উনি রেগে যান। আপনারাই বলুন, এটা কি রেগে যাওয়ার কোনও বিষয়? আমি তো অবাক হয়েছি। বাংলা থেকে কেউ এক জন আমাকে একটি ভিডিয়ো হোয়াটসঅ্যাপ করেছেন। শয়ে শয়ে বাচ্চারা নিজেরা মোবাইলে নিজেদের ভিডিয়ো করে বলছে, ‘দিদি, ও দিদি’। বাংলার সব ঘরের বাচ্চারাই ‘দিদি, ও দিদি’ বলা শুরু করে দিয়েছে।’’

পাল্টা, বসিরহাটের সভায় মমতার বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে কথাবার্তা বুঝে বলতে হয়। যে ভাবে কথা বলতে হয়, তার পরিবর্তে উনি ঠাট্টা করছেন। এমন ব্যবহার করছেন, তাতে মনে হচ্ছে যেন পাড়ার রকে বসা একটা ছেলে। একটা প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতার নামে ভেংচি কাটছেন। ভ্যাংচানো প্রধানমন্ত্রী।’’

Advertisement

বিশিষ্ট অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার অবশ্য সুর করে ‘ও দিদি’ ডাককে ‘রকবাজের’ বাচনভঙ্গি বলছেন না। তবে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘এর মধ্যে যে শ্লেষ আছে, তাতে সন্দেহ নেই। কাউকে ব্যঙ্গ করে ডাকতে হলে নাটকের সংলাপে আমি হয়তো এমন ভাবেই ডাকব।’’

একই প্রশ্নে নাট্যজগতের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের মন্তব্য, ‘‘ওই দিদি ডাকটার মধ্যে একটা স্পষ্ট নারীবিদ্বেষ রয়েছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রীর এক জন মুখ্যমন্ত্রীকে এই ভাবে সম্বোধন করা উচিত নয়। কোনও পুরুষেরই কোনও নারীকে এই ভাবে ডাকা অনুচিত।’’

অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন, তিনি ‘দিদি’ বলে পরিচিত হোন। কিন্তু দিদি ডাকার সময়ে প্রধানমন্ত্রী যে সুরটা ব্যবহার করছেন, তাতে একটা অশালীনতা রয়েছে। আর মঞ্চে ওটা বললেই সভায় একটা কদর্য উল্লাস শোনা যাচ্ছে।’’ সুদীপ্তার মতে, ‘‘খেলা হবে স্লোগানটা যতটা অশ্লীল, ওই দিদি ডাকটাও ততটাই।’’

পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই ধারণা, মোদী এই ডাকের বহর ক্রমে আরও বাড়াবেন। বস্তুত, তাঁর সাম্প্রতিক একটি নির্বাচনী সফরে দু’টি সভায় মোট ১২৬ বার তিনি ‘দিদি, ও দিদি’ বলে কটাক্ষের সুর সেধেছেন। বিজেপির সর্বস্তরেই মোদীর এই ভাষণভঙ্গিমা সমাদৃত। তবে সমালোচকদের কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement