Minakshi Mukhopadhyay

Bengal polls: মীনাক্ষীরাই আগামীর মুখ, বোঝাচ্ছে সিপিএম

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে এবিভিপি-র হাতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশের নজরে পড়েছিলেন ঐশী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ০৪:২১
Share:

চৌরঙ্গীর কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ কুমার পাঠকের প্রচারে মীনাক্ষী । —নিজস্ব চিত্র।

এ বার বিধানসভা ভোটে ঐশী ঘোষ, দীপ্সিতা ধর, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের মতো এক ঝাঁক তরুণী মুখকে ময়দানে নামিয়েছে সিপিএম। ভোটের পরেও আগামী প্রজন্মের মুখ হিসেবে তাঁদের কাজে লাগানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল দলে।

Advertisement

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে এবিভিপি-র হাতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশের নজরে পড়েছিলেন ঐশী। তাঁকে দিল্লি থেকে তুলে এনে নিজের জেলা পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ায় প্রার্থী করেছে সিপিএম। জেএনইউ-এরই ছাত্র রাজনীতি থেকে আসা, প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক পদ্মনিধি ধরের নাতনি দীপ্সিতাকে প্রার্থী করা হয়েছে বালিতে। তবে পরিস্থিতির সুবাদেই এঁদের থেকে আরও এগিয়ে গিয়েছেন কুলটির মীনাক্ষী। এ বারের ভোটে রাজ্যের সব চেয়ে আলোচিত কেন্দ্র নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর বিপরীতে লড়তে গিয়েই নজর কেড়েছেন তিনি। তার পর থেকে গোটা রাজ্যে স‌ংযুক্ত মোর্চার প্রচারে সব চেয়ে বেশি ডাক পাচ্ছেন মীনাক্ষীই। এ বার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের সদর দফতরে যুবনেত্রী মীনাক্ষীকে বলার সুযোগ করে দিয়ে সিপিএম ইঙ্গিত দিল, ভবিষ্যতের মুখ হিসেবে সাদামাঠা, লড়াকু মেজাজের এই তরুণীদের তারা সামনে আনতে চাইছে।

জেলায় জেলায় প্রচারের কাজে চরকি পাকের মাঝেই সময় বার করে নন্দীগ্রামে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নববর্ষ কাটিয়ে এসেছেন সেখানকার সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী। তার পরে শুক্রবার আলিমুদ্দিনে দলের সাংবাদিক সম্মেলনে মীনাক্ষীকে নিয়ে এসেছিলেন মহম্মদ সেলিম। সদর দফতরে দলের পলিটবুরো সদস্য ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রীকে সাংবাদিকদের সামনে এগিয়ে দিচ্ছেন, এমন দৃশ্য সিপিএমে সাম্প্রতিক কালে দেখা যায়নি। মীনাক্ষী যতটুকু সময় বলেছেন, সেই সময়ে সিপিএমের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে দর্শকসংখ্যা বেড়েছে হু হু করে!

Advertisement

আলিমুদ্দিনে মহম্মদ সেলিমের পাশে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

মীনাক্ষী অবশ্য বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে লড়াইটা করেছে সংযুক্ত মোর্চা। আমি প্রার্থী ছিলাম শুধু। দলেরই নির্দেশে মনোনয়ন দাখিল করেছি। আমাদের দলে ব্যক্তি নয়, দলই শেষ কথা। সকলেই দলের দেওয়া দায়িত্ব পালন করছেন।’’

এ বারের ভোটের ময়দানে নেমে মীনাক্ষীর উপলব্ধি, প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী সকলেই নানা মাধ্যমে নিজেদের কথাই বলছেন। মানুষ কী বলতে চান, সেটা ওঁরা শুনছেন না। সংযুক্ত মোর্চার হয়ে তাঁরা সেই কাজ করছেন এবং সাধারণ মানুষের রুটি-রুজির দাবি নিয়েই লড়াই করছেন বলে মীনাক্ষীর যুক্তি। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘সংযুক্ত মোর্চাকে ভোট দেওয়া মানে আপনার বাড়ির ছেলেমেয়েকে ভোট দেওয়া। সাড়ে তিন দশকে বাম সরকার আপনার নৈতিক অধিকার সংরক্ষিত করেছে। আজ আপনি যে প্রতিবাদ করতে পারেন, সেই বীজ বুনে দিয়ে গিয়েছে বাম সরকার। কোনও তোলাবাজ, দাঙ্গাবাজ সেই অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না!’’

মীনাক্ষীর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়কে কুর্নিশ জানাচ্ছেন বিমান বসুর মতো প্রবীণ নেতারাও। ঘরোয়া আলাপচারিতায় বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের মত, ‘‘বুদ্ধও (প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য) অনেকটা এই ভাবে স্কুল শিক্ষকের চাকরি স্বেচ্ছায় ছেড়ে পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হয়েছিল। মীনাক্ষী যে ভাবে সাধারণের ভাষায় কথা বলছে, মানুষের সঙ্গে সহজে মিশে যাচ্ছে, বামপন্থী রাজনীতিতে এটাই দরকার। ওর অধ্যাবসায়, নিষ্ঠা দেখে আমরা সত্যিই খুশি।’’

সেলিম, মীনাক্ষী সকলেই এ দিন আর্জি জানিয়েছেন করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে বড় কর্মসূচি বন্ধ রাখার। সেলিম বলেছেন, নির্বাচন কমিশন দায়ে পড়ে কিছু রূপরেখা দিলেও কার্যকরী কিছু করছে না। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে বড় সভা থেকে বিরত হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। অমিত শাহদের কর্মসুচি যাতে ‘সুপারস্প্রেডার’ না হয়ে ওঠে, তার জন্য সতর্ক হওয়ার কথা বলছেন তাঁরা।

উত্তর দমদমের বিধায়ক ও সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে ভিড় এড়াতে ওই কেন্দ্রে রবিবার ও মঙ্গলবারের নির্ধারিত সংযুক্ত মোর্চার দু’টি মহামিছিল বাতিল করা হয়েছে। নাগরিকদের প্রয়োজনে ‘শ্যামল চক্রবর্তী কোভিড পরিষেবা কেন্দ্র’ খোলা থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement