শুক্রবার মেচেদার সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের হাতিয়ার কর্মসংস্থান। শিক্ষায় এগিয়ে থাকা জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে এসে ভোট বার্তায় সেই আবেগকেই ছুঁয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার জেলায় তিনটি সভা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এগরা, পটাশপুর ও মেচেদা— তিন জায়গাতেই শিক্ষক নিয়োগ-সহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মেচেদা বাজার সংলগ্ন শহিদ মাতঙ্গিনী ময়দানের সভায় মমতা বলেন, ‘‘ছাত্র-ছাত্রীরা ১০ লক্ষ টাকার ক্রেডিট কার্ড পাবে। ছেলেমেয়েরা মেডিক্যাল কলেজে যাবে, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যাবে। অধ্যাপক হবে, শিক্ষক হবে। নিজের টাকায় নিজে পড়ার সুযোগ পাবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আরও অনেক কাজ আমাদের মাথায় আছে। শিক্ষক সংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে। মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিক্যাল পড়ানো হবে। যারা ভাল কাজ করবে হোমগার্ড থেকে তাদের ইতিমধ্যে জুনিয়র কনস্টেবল করা শুরু হয়েছে।’’
শিক্ষা ক্ষেত্রে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূমিকা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘আপনারা পড়াশোনায় খুব ভাল। আমি যখন মাধ্যমিকের মেধাতালিকা দেখি, দেখি মেদিনীপুর প্রথম হয়েছে, নয় দ্বিতীয়।’’ মহাত্মা গাঁধীর নামে বিশ্ববিদ্যালয়, তমলুকে মেডিক্যাল কলেজের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। কাঁথিতেও মেডিক্যাল কলেজ হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। মমতা বলেন, ‘‘রাজ্যে ২ কোটি ৫৬ লক্ষ সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রী বৃত্তি পেয়েছে। আগামী দিনেও ১২ ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীরা একটা করে ট্যাব পাবে।’’ কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে তাঁর বার্তা, ‘‘তাজপুর বন্দর হলে জেলার ছেলে-মেয়েরা কাজ পাবে। লক্ষ লক্ষ ছেলে-মেয়েদের কাজ হবে। এ ছাড়াও এখানে একটা ল্যান্ডিং সেন্টার হচ্ছে। মাছ বিক্রির জন্য দিঘায় ফিস অকশন মার্কেট হচ্ছে। দিঘাসুন্দরীকে কী ভাবে সাজিয়ে দিয়েছি, তা আপনারা দেখেছেন।’’
কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্প থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন— বারবারই এ দিন মমতা ছুঁয়ে গিয়েছেন মেদিনীপুরের আবেগ। তমলুকের দেবী বর্গভীমার পৌরাণিক মাহাত্ম্য উল্লেখ ও মন্ত্রোচ্চারণও করেন তিনি। বলেন, ‘‘সব পরিবারের মা-ভাই-বোনের জন্য মায়ের কাছে প্রার্থনা করলাম।’’
এ দিন বিজেপিকেও বারবার বিঁধেছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বলেন, ‘‘বিজেপির মতো দল নির্বাচন এলেই বলবে হরি হরি। আর পিছনে ডাকাতি করি।’’ বিজেপির পাশাপাশি বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেসের সংযুক্ত মোর্চাকেও ভোট না দেওয়ার জন্যও এ দিন আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।