ফাইল চিত্র।
মানুষের প্রয়োজনেই রাজ্যে তাঁর সরকার থাকবে বলে মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের মনোভাব বুঝি। ছোট থেকে রাজনীতি করি।’’ তাঁর দাবি, দুই তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে ফের ক্ষমতায় আসছে তৃণমূল।
ভোট-প্রচারে মোদী-শাহের দলের স্লোগান ‘এ বার বিজেপি’। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপির রাজ্য নেতারাও বলছেন, তৃণমূল সরকার এ বার চলে যাবে। এ দিন বর্ধমানের সভা থেকে তা নিয়েই প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘‘বলছেন, দিদি চলে যাবে। দিদি যাবে না। দিদি থাকবে।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘তুমি জেনে রেখে দাও মোদীবাবু, আগামী দিনে তুমি যাবে। দিদিকে ‘এক্স’ ( প্রাক্তন) বলার জায়গা নেই। ওটা দিদির স্বেচ্ছামৃত্যু। তোমাকে তো আমরা ‘এক্স’ করবই। বাংলা জিতে দিল্লিতে ঝাঁপাব।’’
এ দিন পূর্ব-বর্ধমানের গলসি ও পূর্বস্থলীতে দুটি সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘সিপিএমের হার্মাদ আর আমাদের কিছু গদ্দার ভেবেছিল, বিজেপিকে ক্ষমতায় আনবে। এত সস্তা? বিজেপি গোল্লা পাবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমি সারা বাংলা ঘুরেছি। বিজেপি কোথাও আসছে না। মানুষ বিজেপিকে বিশ্বাস করে না, ভালবাসে না।’’ ভোটের প্রথম দু’টি পর্বের পর থেকেই রাজ্যে ২০০ আসন নিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে বলে একাধিক সভায় দাবি করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ দিন সেই
প্রসঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বকে খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘বলে, একশো আসন, পাব, দু’শো আসন পাব। বলো, তুমি ৫০০ আসন পাবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী যখন নির্বাচনী প্রচারে পূর্ব বর্ধমানে ঠিক সেই সময়ই আসানসোলে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রশাসনের নানা বিষয় নিয়ে মমতাকে নিশানা করেছেন মোদী। পাল্টা প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী প্রচারে এসে মিথ্যা কথা বলে যান। সবটা ভাঁওতা, কুপ্রচার।’’ মমতার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘ওঁরা বলছেন, তৃণমূল সব টাকা চুরি করেছে। তাহলে কন্যাশ্রীর টাকা মেয়েরা পাচ্ছে কী করে? কৃষকবন্ধু, স্বাস্থ্যসাথী— এ সব পাচ্ছে কী করে? তোমরা হচ্ছ, চোরেদের ঠাকুরদাদা।’’ তারপরই কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বলেন, ‘‘নোটবন্দি করেছে, আজ পর্যন্ত মানুষ হিসেব পায়নি। লকডাউন করেছে, কত লোকের চাকরি খেয়ে নিয়েছে। রেলের ৭৫ শতাংশ বিক্রি করে দিচ্ছে।’’
এ দিনের সভাগুলিতেও করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে রাজ্যে আট দফায় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী। কমিশনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে এদিন ফের তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি যা বলছে, তাই করছ। তোমার একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। ২০২০ সালে জনস্বার্থে মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের একটা রায় আছে, যে ‘ক্লাব’ ( দফা এক সঙ্গে) করতে পার। কেন করলে না? চার দিন কমাতে পারলে প্রচারের, তাহলে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম দফা এক সঙ্গে কেন করতে পারলে না?’’
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এ দিনও উদ্বেগ জানিয়ে আঙুল তুলেছেন বাইরে থেকে প্রচারে আসা বিজেপির নেতা ও কর্মীদের দিকে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাংলায় প্রায় ১০ হাজার বাইরের লোক এসে বসে রয়েছে। অধিকাংশ কোভিড নিয়ে এসেছে। বাংলায় কোভিড ছড়াচ্ছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, বাইরে থেকে এলে এখন আরটিপিসিআর অনুযায়ী করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।