সাহাবউদ্দিনের নামে এই নোটিস ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের মধ্যেই সরকারি প্রকল্প ঘিরে রাজনৈতিক তরজা ঘনিয়ে উঠল দেগঙ্গায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাওয়া বাড়ি তৈরির টাকা ফেরত চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের দখলে থাকা পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে বিজেপি-র তরফে আক্রমণের তির ছুটে এলে, যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন পঞ্চায়েত প্রধান। তাঁর বক্তব্য, বাড়ি তৈরির টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ পেয়ে মৌখিক সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন মাত্র। ভুয়ো নথি বানিয়ে বিতরণ করে বিজেপি-র লোকজনই তাঁর বদনাম করার চেষ্টা করছে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
দেগঙ্গার হাদিপুর ঝিকরা দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তরা আবজানগরের ৪০টি পরিবার পঞ্চায়েত প্রধান সাহাবউদ্দিন মণ্ডলের বিরুদ্ধে টাকা ফেরত চাওয়ার এই অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, বিধি মেনে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় টাকার জন্য আবেদন জানিয়েছিল প্রত্যেক পরিবার। সম্প্রতি সেই টাকা হাতে এসেছে। কিন্তু তার পরই গত ১ মার্চ পঞ্চায়েত প্রধানের নামের লেটারহেড দেওয়া কাগজে নোটিস এসে পৌঁছয় সকলের কাছে। তাতে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। টাকা ফেরত না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়, যা সকলের মনে ভয় ধরিয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা মিজানুর মণ্ডল জানিয়েছেন, রসিদ-সহ টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে নোটিসে। আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ)সদস্য মিজানুরের দাবি, যে সমস্ত পরিবার তৃণমূল-বিরোধী, বেছে বেছে তাদের কাছেই নোটিস পৌঁছেছে। ভোটের কথা মাথায় রেখেই চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে সকলের উপর। এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন বারাসতের সাংগঠনিক জেলা বিজেপি-র সদস্য তরুণকান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘কাটমানি খেয়ে গলা পর্যন্ত ভরে গিয়েছে তৃমমূলের। তাই মানুষকে চাপ দিয়ে ভোটের ঝুলি ভরতে চাইছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’’
তবে যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই পঞ্চায়েত প্রধান সাহাবউদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের তরফে হুইপ জারি করে এই ধরনের কোনও নোটিস ধরানো হয়নি। সরকারি নিয়ম মেনে সকলকে বাড়ি তৈরি করতে বলা হয়েছে। কারণ অভিযোগ এসেছিল, আবাস যোজনার টাকা অনেকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। তাই মৌখিক ভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। আমার নামের লেটারহেডে কোনও নোটিস ধরানো হয়নি।’’ সাহাবউদ্দিনের অভিযোগ, যে নোটিসের কথা বলা হচ্ছে, তাতে তাঁর নাম ছাপা থাকলেও, স্বাক্ষর নেই। অর্থাৎ চক্রান্ত করে পঞ্চায়েত প্রধান ও তৃণমূলের বদনাম করা হচ্ছে।