রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ জিতেন্দ্র তিওয়ারির। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি-তে যাওয়ার দিন দুয়েকের মধ্যেই ‘সক্রিয়তা’ প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে উঠলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র (জিতেন) তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার দিনভর তাঁকে দেখা গেল নানা কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকতে। জিতেন দেখা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে। যা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। আগামী ৭ মার্চ রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রিগেডে সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতেও পৌঁছে যান জিতেন। দিনের শেষে, টুইট করে ‘বিজেপির সঙ্গে উন্নয়নের মহাযজ্ঞে শামিল’ হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সব জল্পনা সত্যি প্রমাণ করে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন জিতেন। হুগলির বৈদ্যবাটিতে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সভায় দলবদল করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিগত কয়েক বছর ধরে মনের ভাবনা বাইরে প্রকাশ করার খুব একটা সুযোগ ছিল না। মনে এক কথা থাকত, আর বাইরে আর এক কথা বলতে হত। যেটা মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইতাম, তা করার অবকাশ ছিল না। এখন থেকে আমার বক্তব্যে আর কোনও কৃত্রিমতা থাকবে না। সেই সুযোগ আমাকে করে দেওয়া হয়েছে। যা মনে আসবে তাই বলব।’’ ঘটনাচক্রে তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বৃহস্পতিবার জিতেন পৌঁছে গেলেন রাজ্যপালের দরবারে। ধনখড়ের হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেন তিনি। কিছু ক্ষণ তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতাতেও মেতে ওঠেন। তৃণমূলে থাকাকালীন জিতেন্দ্রর সঙ্গে রাজ্যপালের এমন আলাপচারিতার সুযোগ কখনও ঘটেছে কি না তা স্মরণ করতে পারছেন না অনেকেই।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে ব্রিগেডে যান জিতেন। আগামী ৭ মার্চ ব্রিগেডে সমাবেশ বিজেপি-র। সেই উপলক্ষে রাজ্যে ফের এক বার ভোট প্রচারে আসছেন প্রধানমন্ত্রীও। ব্রিগেড পরিদর্শনের সময়েই বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জিতেন। শেষবেলায় নেটমাধ্যমেও ‘সক্রিয়’ হয়ে ওঠেন তিনি। শেষ ৩ মাস তৃণমূলে থাকাকালীন ‘অজ্ঞাতবাস’ কাটিয়েছিলেন। ঘাসফুলের সংগঠনের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। তবে মাঝে মাঝে ‘ইঙ্গিতবাহী’ মন্তব্য বা শায়েরি পোস্ট করে নিজের ‘মতবাদ’ ভাসিয়ে দিতেন নেটমাধ্যমে। বৃহস্পতিবার সেই জিতেন স্পষ্ট ভাষায় টুইট করেছেন, ‘বাংলার শিল্পের হাল ফেরানোর লক্ষ্যে, গণতন্ত্রের মেরুদণ্ডকে শক্ত করতে, ছাত্র-যুবদের দু'হাতে কাজ তুলে দিতে, বাংলায় উন্নয়ন আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। বিজেপি-র সঙ্গে উন্নয়নের এই মহাযজ্ঞে শামিল হন আপনিও।’
২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের অন্যতম ‘সৈনিক’ ছিলেন জিতেন। এ বার তিনি বিজেপিতে। নতুন দলে যোগ দিয়েই ‘সক্রিয়’ হয়ে ওঠা নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘দলের কাজ করছি। রাজ্যে পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করছি। পরিবর্তনের দায়িত্ব রাজ্যের সব মানুষের। সেই কাজে এখন লেগে পড়েছি।’’