গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাত পোহালেই তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তার আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেটমাধ্যমে ভোটে না-দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করলেন বিধানসভায় তৃণমূলের উপ-মূখ্যসচেতক সমীর চক্রবর্তী। নিজের ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি দলনেত্রীকে জানিয়েছি, দলের হয়ে প্রচার করব, প্রার্থী হতে চাই না।’’ তাঁর এমন ঘোষণার পরেই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে তৃণমূলে। আনন্দবাজার ডিজিটালকে বৃহস্পতিবার সমীর বলেন, ‘‘সবাই যদি প্রার্থী হয়ে যায় তা হলে প্রচার করবে কে? বিজেপি সারা ভারতের নেতাদের এনে প্রচার করছে। এখানে একা মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কত টানবেন? প্রচারের ভার আমাদের কারও কারও কাঁধে আসা উচিত। ভাগ করে নেওয়া উচিত সেই দায়িত্ব। তাই আমি সেই দায়িত্ব স্বেচ্ছায় নিতে চাই।’’
সত্তরের দশকের শেষের দিকে ছাত্র পরিষদ দিয়ে রাজনীতি শুরু করেন সমীর। তাঁর রাজনৈতিক পরিচিতি ‘বুয়া’ নামেই। ২০১২-য় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসেন তিনি। ২০১৬-য় বাকুঁড়ার তালড্যাংরা আসন থেকে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রকে হারিয়ে প্রথম বারের জন্য বিধায়ক হন তিনি। ২০১৬-য় তালড্যাংরায় ভোটে দাঁড়ানোর আগে সমীরের দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে ধনী প্রার্থীও ছিলেন তিনি। তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৪০ কোটি টাকা। তবে প্রথম বারের বিধায়ক সমীরের তথ্য সমৃদ্ধ আক্রমণাত্মক বক্তৃতা অল্প সময়েই তৃণমূলের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। সেই কারণেই তাঁকে দলের অন্যতম মুখপাত্রও করা হয়। বৈদ্যুতিন মাধ্যমের বিতর্কসভাতেও এখন নিয়মিত দলের মুখ সমীর। এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুব কাছের মানুষ বলেও তাঁর পরিচিতি। সমীরের স্ত্রী কৃষ্ণা চক্রবর্তী বিধাননগর পুরসভার মেয়র ছিলেন। বর্তমানে তিনিই পুর প্রশাসক। দলের প্রিয়পাত্র সমীর কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
২০১৬-র বিধানসভা ভোটে সমীর চক্রবর্তী জয়ী হন ১৩ হাজার ৬৫৯ ভোটে। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে তাঁর ওই কেন্দ্রে তৃণমূল ১৭ হাজার ২৬৮ ভোটে পিছিয়ে ছিল। সে কারণেই কি এই সিদ্ধান্ত, উঠেছে প্রশ্ন।