ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ নীলবাড়ির লড়াইয়ের ‘হট সিট’ নন্দীগ্রামে। আহর সেই আসনের ‘উত্তপ্ত’ পরিস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের চিন্তা বেড়েছে বলে সূত্রের দাবি। সেই কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু দাওয়াইয়ের কথাও ভেবেছেন কর্তারা। কমিশন সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে বাড়তি নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অশান্তির আশঙ্কা তৈরি হলে প্রয়োজনে গোটা নন্দীগ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করে ভোট করানোর ভাবনাও রয়েছে কমিশনের।
নন্দীগ্রামে বুথের সংখ্যা ৩৫৫টি। এই কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী বা প্রায় ১৬০০ জন জওয়ানকে মোতায়েন করার পরিকল্পনা করেছে কমিশন। এ ছাড়াও থাকবে রাজ্য পুলিশ। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের জন্য ২১ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ছিল। এই কেন্দ্রের উপর বাড়তি নজর রাখতে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বিশেষ সেল তৈরি করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোটের দিন সকাল থেকেই এই সেলের অফিসারেরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, নন্দীগ্রামের ৭৫% বুথকে ওয়েবকাস্টিংয়ের আওতায় রাখা হবে। অর্থাৎ প্রায় ২৬৭টি বুথে ক্যামেরা থাকবে। বিভিন্ন দিক থেকে ভিডিয়ো ফুটেজ কমিশনের কন্ট্রোল রুমে সম্প্রচারিত হবে।
কমিশনের এক কর্তা জানান, কোন বুথ কতটা সংবেদনশীল, তার উপরেই এই পদ্ধতি নির্ভর করে। সেই ওয়েবকাস্টিং দেখতে পারবেন সেক্টর, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক এবং সিইও দফতরের অফিসারেরা। কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই ওয়েবকাস্টিংয়ের ছবি রেকর্ড করে রাখা যাবে। এ ছাড়াও থাকবে সাধারণ ভিডিয়োগ্রাফির ব্যবস্থা। বুধবার সকাল ছ’টা থেকে ২ এপ্রিল সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত নেটওয়ার্ক ঠিক রাখতে বলা হয়েছে টেলিফোন সংস্থাগুলিকেও।
সিইও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে একজন করে মাইক্রো-অবজ়ারভার রাখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় থাকবে ফ্লাইং স্কোয়াডও। ভোটের সময় আচমকা গোলমাল রুখতে ২২টি কুইক রেসপন্স টিমও প্রস্তুত থাকবে।
দ্বিতীয় দফায় যে চার জেলায় ভোট, সেই সব জেলার জেলাশাসক ও এসপি-র সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি নীরজনয়ন পাণ্ডে। নন্দীগ্রাম কেন্দ্রটিতে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
ভোট-কর্তারা জানাচ্ছেন, সাধারণত বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করা যায়। দরকারে তেমন কোনও গোলমালের সম্ভাবনা তৈরি হলে বুথ এলাকার বাইরেও ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করা হতে পারে। তবে এই সিদ্ধান্ত নেবেন ওই কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার। এক কর্তার বক্তব্য, “রিটার্নিং অফিসারকে ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে। তিনি মনে করলে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতেই পারেন।” প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় দফার ভোট যেখানে রয়েছে, সেই জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে সোমবারই আলাদা করে ভিডিয়ো-বৈঠক করেছিলেন সিইও আরিজ আফতাব। তাতে কোভিড, আইনশৃঙ্খলা-সহ বাকি প্রস্তুতির চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই বৈঠকেও নন্দীগ্রাম কেন্দ্র নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়েছিল বলে খবর।