প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ছ’টি বিধানসভার নির্বাচনী সাধারণ পর্যবেক্ষকের গোটা দল করোনা আক্রান্ত। তা নিয়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারণ, ইতিমধ্যেই এই দলের প্রতিনিধি আধিকারিকেরা নির্বাচনের কাজে যুক্ত আধিকারিক, কর্মীদের সঙ্গে বেশ কয়েক বার বৈঠক করা থেকে একসঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছেন। তাই এঁদের মাধ্যমে আর কত জনের মধ্যে যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে তা ভেবেই ঘুম উড়েছে প্রশাসনের।
জেলার ছ’টি বিধানসভার জন্য এক জন সাধারণ পর্যবেক্ষক পাঠানো হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আরও ছ’জন আধিকারিক রয়েছেন। এঁরা সকলেই বুনিয়াদপুর সার্কিট হাউজ়ে থাকছেন। এঁদের সঙ্গে রান্নার লোক, ঘরের কাজ করার লোক, গাড়ির চালক মিলিয়ে আরও জনা দশেক কর্মীও এখানে থাকছেন। ফলে এঁদের অনেকেও আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, পর্যবেক্ষকদের এই দলের এক সদস্যের সামান্য জ্বর হয়েছিল। তার পরেই সাধারণ পর্যবেক্ষক বাদে সকলেই করোনা পরীক্ষা করানো হয়৷ তখনই ছ’জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। পর্যবেক্ষক নিজে এখনও পরীক্ষা করাননি। তবে তিনিও নিভৃতবাসে আছেন। এ দিকে গোটা দল আক্রান্ত হওয়ায় নির্বাচনের কাজ কী ভাবে সামালানো হবে তা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। কারণ আক্রান্ত এই দলের বদলে এখন নতুন দল আনতে হবে। জেলাশাসক সি মুরুগান বলেন, ‘‘আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পর্যবেক্ষক নিজেও আইসোলেশনে আছেন।’’
এ দিকে, নির্বাচনের কাজে যুক্ত পর্যবেক্ষকদের দলের একাংশ করোনা মোকাবিলার সরকারি ব্যবস্থা নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, এই ভাবে চললে অচিরেই বহু মানুষ আক্রান্ত হয়ে যাবেন। সে ক্ষেত্রে মহামারির প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হবে। তাই দ্রুত প্রচার, জনসভা, মিছিল পুরোপুরি বন্ধ রাখা উচিত বলে অনেকেই মনে করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা উচ্চ নিরাপত্তা বলয়ে থেকে কাজ করছি। তার পরেও আক্রান্ত হচ্ছি। তা হলে মিছিলে যাওয়া সাধারণ মানুষের অবস্থা একবার ভাবুন। এখনই ভোটের প্রচার বন্ধ করে দেওয়া দরকার।’’ আধিকারিকদের অনেকেই প্রতিষেধকও পাননি। শুধু তাই নয়, তাঁদের জন্য কমিশন মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করার নির্দেশ দিলেও সরকারি ভাবে এ সব কিছুই আধিকারিকেরা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এ দিন আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই করোনা নিয়ে সরকারের উদাসীনতা ও গাফিলতির বিষয়টি নগ্ন ভাবে বেরিয়ে পরেছে। যদিও জেলাশাসক জানিয়েছেন, দ্রুত মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার আধিকারিকদের মধ্যে বিলি হবে।