—প্রতীকী ছবি।
ভোট চাই? তা হলে অঙ্গীকার করুন, ভোটে জিতলে দল বদলাবেন না— এই মর্মে ফর্ম ঘুরছে সামাজিক মাধ্যমে। সেখানে বলা হয়েছে, যিনি এক দলের ভোটে জিতে অন্য দলে চলে যাবেন, তিনি ‘পশুর অধম’। ভোটারদের তরফেও লেখার জায়গায় উল্লেখ করা থাকছে— ‘জেতার পরে পাল্টি খেয়ে আমাদের ভোটের অপমান করবেন না’।
এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে সব আলোচিত বিষয়, দল বদল। দলবদলকারীদের কারও যুক্তি, তাঁরা উন্নয়নের সঙ্গে থাকতে চান। কেউ আবার বলেছেন, দলে থেকে দম বন্ধ হয়ে আসছিল্, কাজ করতে পারছিলেন না। এই ব্যাখ্যা সঙ্গে করে যেমন শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বা দীনেশ ত্রিবেদীর মতো ওজনদার নেতা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েছেন, তেমনই দল বদল হয়েছে নিচুতলাতেও। দলবদল করে নতুন দলের থেকে গুরুত্ব না পেয়ে পুরনো দলে ফিরতে চেয়েছিলেন কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে ফর্মটির আবির্ভাব যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রশ্ন উঠেছে, কেউ বা কারা কি তবে প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রকারান্তরে মুচলেকা লিখিয়ে নিতে চাইছেন?
গত বিধানসভা ভোটে ইসলামপুর থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন কানাইয়ালাল আগরওয়াল। ভোটে জেতার পর তিনি তৃণমূলে নাম লেখান। গত লোকসভা ভোটে ঘাসফুলের হয়ে প্রার্থীও হয়েছিলেন। সে জন্য অবশ্য তাঁকে বিধায়ক পদ ছাড়তে হয়। এই ফর্ম প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে কানাইয়া বলেন, ‘‘এখনও এমন কিছু হাতে পাইনি। কোনও ভোটার এমন ফর্ম দিলে যা করার করব।’’
চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) অবশ্য মনে করেন, এমন ফর্ম প্রতিটি ভোটারের কাছে থাকা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘ভোট চাইতে এলে আগে প্রার্থীর কাছ থেকে এমন অঙ্গীকারপত্র লিখিয়ে নেওয়া উচিত। কেন না, ভোটাররা একটি দলের আদর্শ দেখে প্রাথী নির্বাচন করেন। কিন্তু জেতার পরে প্রার্থী নিজের স্বার্থে দলবদল করছেন। এতে ভোটাররা হতাশ হয়ে পড়ছেন।’’ বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের জেলা সম্পাদক বিশ্বজিৎ লাহিড়ীর আবার দাবি, ‘‘দলবদল করা গণতান্ত্রিক অধিকার।’’ যদিও ভোটারদের অনেকেই চাইছেন, এমন ফর্ম ঘুরুক হাতে হাতে।