বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকে প্রথম বার জয়ী হয়েছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়।
বিধানসভায় এমন দৃশ্য নজিরবিহীন। এর আগে বিধানসভায় বাবা-ছেলে, কাকা-ভাইপো একই সঙ্গে শপথ নিলেও বাবা-মেয়ের একসঙ্গে শপথ নেওয়ার দৃশ্য এই প্রথম দেখল বিধানসভা। বৃহস্পতিবার একসঙ্গে শপথ নিলেন বাবা দুলাল দাস এবং মেয়ে রত্না চট্টোপাধ্যায়। মহেশতলা থেকে জিতে দ্বিতীয় বারের জন্য বিধায়ক হয়েছেন তৃণমূল নেতা দুলাল। রত্না প্রথম বার জয়ী হয়েছেন বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকে। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চললেও রত্নার পরিচয় কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী হিসেবে। বৃহস্পতিবার বাবা দুলাল ও ছেলে ঋষির সঙ্গে বিধানসভায় আসেন রত্না। বিধানসভার অধিবেশন কক্ষেই নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথগ্রহণ পর্ব ছিল। বাবা দুলালের সঙ্গে রত্না শপথ নেন সেখানেই। ঋষি বসেছিলেন অতিথি-গ্যালারিতে।
প্রোটেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায় শপথবাক্য পাঠ করান রত্নাকে। কিছু দূরে বসে থাকা দুলালের মুখে তখন তৃপ্তির হাসি। গ্যালারিতে বসে মায়ের শপথগ্রহণ দেখলেন ঋষিও। দুলালের শপথের সময় অধিবেশন কক্ষেই ছিলেন রত্না। শপথ শেষ করে বাবার সঙ্গেই অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে শোভন জায়া বলেন, ‘‘প্রথম বারই দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)-র আস্থার মর্যাদা রাখতে পেরে ভাল লাগছে। এখন শুধুই বেহালার মানুষের আস্থার মর্যাদা দিতে চাই।’’
২০০৬-এ তৃণমূলের টিকিটে বাবা শিশির অধিকারী যখন এগরা থেকে বিধায়ক হন, সে বার জোড়াফুলের প্রতীকেই দক্ষিণ কাঁথি থেকে জেতেন ছেলে শুভেন্দু অধিকারী। পরে একসঙ্গে শপথ নিয়েছিলেন বিধানসভায়। ১৯৭২ সালে কংগ্রেসের টিকিটে কাশীপুর থেকে প্রফুল্লকান্তি ঘোষ জিতেছিলেন। একই বছরে তাঁর ভাইপো তরুণকান্তি ঘোষ অশোকনগর থেকে জয়ী হন। পরে একই সঙ্গে বিধানসভায় শপথ নিয়েছিলেন কাকা-ভাইপো।
মেয়ের সঙ্গে একই দিনে বিধায়ক হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দুলাল বলেন, ‘‘বিধানসভার ইতিহাসে প্রথম বাবা-মেয়ে হিসেবে আমরা শপথ নিলাম, এই বিষয়টা জানা ছিল না। ভালই লাগছে। তবে সবচেয়ে আনন্দ হচ্ছে আমার মেয়ে একটা ভাল কাজ করার জায়গা পেল বলে। গত তিন বছর ওঁর সঙ্গে যা হয়েছে, বাবা হিসেবে খুব কষ্ট পেয়েছি। ওকেও কষ্ট পেতে, লড়াই করতে দেখেছি। আশা করি, অতীত ভুলে বুড়ি (রত্নার ডাকনাম) বেহালা পূর্বের অসম্পূর্ণ কাজগুলো করবে।’’
বাবা-মেয়ে শুধু নয়, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় শপথ নিয়েছেন এক দম্পতিও— সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না এবং হরিপালের বিধায়ক করবী মান্না।