গ্রাফিক: নিরুপম পাল।
ইমেলে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে তৃণমূল ছাড়লেন প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস। বুধবার ইমেলে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে দুই লাইনে লেখা একটি ছোট্ট বয়ানে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। পদত্যাগপত্রের একটি কপি পাঠানো হয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। আগামীকাল রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোট। ঠিক তার একদিন আগে দল ছাড়ার ঘোষণা অপ্রত্যাশিতই ঠেকেছে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। পদত্যাগপত্রে উপেন লিখেছেন, ‘‘আমি তৃণমূলের সবরকম সদস্যপদ, তৃণমূলের সিবিআইয়ের উপদেষ্টা ও কোর কমিটির সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম। এছাড়াও যদি আর কোনও পদ থেকে থাকে, সেখান থেকেও আমাকে নিষ্কৃতি দেওয়া হোক।’’
প্রসঙ্গত, সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনপর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধেই তৃণমূলে যোগ দেন এই দুদে আইপিএস অফিসার। ২০১১ সালে বাগদা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক দুলাল বরকে সরিয়ে টিকিট দেওয়া হয় উপেনবাবুকে। সেই নির্বাচনে জিতে রাজ্যের অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মন্ত্রী হন। কিন্তু ২০১৬ সালে বা-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে দুলাল ফের প্রার্থী হলে তাঁর কাছে পরাজিত হন উপেন। তারপর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর। দলের কোনও কর্মসূচিতেও আর তাঁকে সেভাবে দেখা যেত না। জানা গেছে, কিছুদিন ধরেই নাগরিক সংশোধনী আইন নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে ভিন্ন অবস্থান ছিল তাঁর। সেই বিষয় নিয়েও তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা করেননি। আর বুধবার নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে নিজের যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলেন উপেন্দ্রনাথ।
মতুয়া সমাজের প্রতিনিধি হলেও, তৃণমূলে তাঁকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাছাড়া ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর দল প্রশাসনিক বা সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও তাঁকে ব্রাত্য করে দেওয়া হয়েছিল বলেই অভিযোগ। এবারের ভোটে তাঁকে আর প্রার্থী করার কথা ভাবেননি মমতা। যেই কারণে প্রায় নিঃশব্দেই দল ছেড়ে গেলে একদা দোর্দ্দন্ডপ্রতাপ এই প্রাক্তন পুলিশকর্তা।