—প্রতীকী ছবি।
ছয় থেকে আট দফায় পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন করার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন।
পাঁচ রাজ্যের ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে হওয়া বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে আজ করোনা সংক্রমণ ও আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি মাথায় রেখেই পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ছয় থেকে আট দফায় ভোট করানোর প্রশ্নে আলোচনা হয়েছে। আগামী ২ মার্চ ফের একপ্রস্ত বৈঠক ডেকেছে কমিশন। ওই বৈঠকে কালো টাকা রোখা, ভোটের সময়ে জনতাকে প্রভাবিত করতে মদ ও মাদকের ব্যবহার কী করে রোখা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
মার্চের প্রথম সপ্তাহেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ সকাল ১১টায় নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোড়ার নেতৃত্বে বৈঠকে বসে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। সূত্রের মতে, আজকের বৈঠকের অন্যতম বিষয় ছিল পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কী ভাবে শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করা যায়, তা নিয়ে বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের স্পর্শকাতর বুথের শনাক্তকরণ ও হিংসা প্রতিরোধ কী ভাবে আধাসেনা মোতায়েন করা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মূলত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পাঠানো জেলাওয়াড়ি স্পর্শকাতর বুথের হিসেব ও সেগুলির সুরক্ষা সম্পর্কিত তথ্যের ভিত্তিতে আলোচনা হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনের বৈঠকের পরেই পশ্চিমবঙ্গে কত দফায় ভোট হবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
করোনা কালে বিহারের নির্বাচনে সংক্রমণ রোখার কৌশল হিসাবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়েছিল কমিশন। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, পাঁচ রাজ্যের ভোটেও বুথের সংখ্যা বাড়ানো হবে। পশ্চিমবঙ্গে গত বিধানসভায় সাত পর্বে ভোট হয়েছিল। এ যাত্রায় একে করোনা, তায় রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ঘিরে নানাবিধ অভিযোগ থাকায় অন্তত সাত পর্বে তো বটেই প্রয়োজন আট দফাতেও ভোট করানোর বিষয়ে ভাবছে কেন্দ্র। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কমিশনের কাছে সমস্যা হল সময়সীমা। ভোট ঘোষণার মাত্র দুমাসের মধ্যে ভোট প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে কমিশনকে। কমিশনের এক কর্তার কথায়, “ভোট ঘোষণা ও নির্দেশিকা জারির অন্তত ২১ দিন পরে ভোট প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে হাতে মাত্র মাত্র এক মাস সময় পাওয়া যাবে। ওই এক মাসের মধ্যে আট দফায় ভোট করিয়ে ফলপ্রকাশ করতে হবে কমিশনকে।” পশ্চিমবঙ্গে ছয় থেকে আট দফায় হলেও, পুদুচেরি ও অন্ধ্রপ্রদেশে এক দফায়, কেরল ও অসমে দু’দফায় ভোটের পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। আজ প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠকে কেরল ও পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছে কমিশন।
নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে আরও একাধিক বৈঠকে বসতে চলেছেন কমিশন কর্তারা। কমিশন সূত্রের মতে, আগামী ২ মার্চ সকাল সাড়ে এগারোটায় ফের বৈঠক হতে চলেছে। ওই বৈঠকে কমিশন কর্তারা ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন রাজস্ব সচিব, আয়কর, শুল্ক ও আর্থিক গোয়েন্দা শাখার শীর্ষ কর্তারা। কী ভাবে ভোটের সময় কালো টাকা রোখা যায়, ভোটারদের প্রভাবিত করতে উপহার দেওয়া, ভোটের আগে মদ ও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার রোখা সম্ভব হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।