মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ও দীপ্সিতা ধরের সঙ্গে বৃন্দা কারাট। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে মহিলা সুরক্ষায় ‘অ্যান্টি-রোমিয়ো স্কোয়াড’ গড়ার ঘোষণা করছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেই সময়েই প্রচারে এসে সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য বৃন্দা কারাট পাল্টা বললেন, বিজেপি ক্ষমতায় এসে পড়লে ‘নারী-বিদ্বেষী’ শক্তির আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ও দীপ্সিতা ধরের মতো যুব নেত্রীদের পাশে নিয়ে মানুষের কাছে সিপিএমের সর্বভারতীয় নেত্রীর আবেদন, মহিলাদের সুরক্ষার স্বার্থ মাথায় রেখে বিজেপিকে ভোট দেবেন না।
বালির সিপিএম প্রার্থী এবং এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় নেত্রী দীপ্সিতার সমর্থনে বৃহস্পতিবার জনসভায় ছিলেন বৃন্দা। সেখানে ছিলেন নন্দীগ্রামের সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষীও। বৃন্দা বলেন, ‘‘এক জন মুখ্যমন্ত্রী এখানে এসে মহিলা সুরক্ষা নিয়ে নানা কথা বলছেন। ওঁদের দল সরকারে এলে নারী-বিদ্বেষী শক্তির হাতে ক্ষমতা যাবে। যারা মনুবাদে বিশ্বাস করে, মহিলাদের স্বাধীনতা মানে না, তাঁদের মর্যাদা দিতে জানে না। হাথরস, উন্নাওয়ের ঘটনা মনে রাখুন। মাথায় রাখুন, গেরুয়া শিবিরের হাতে নারী নিরাপত্তার হাল কী হতে পারে!’’ বিভিন্ন সময়ে বিজেপি নেতাদের মহিলাদের প্রতি অসম্মানসূচক মন্তব্যের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে বৃন্দার সংযোজন, ‘‘এ রাজ্যে এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী আছেন। তবু এখানেও মহিলাদের নিরাপত্তা বেহাল। পার্ক স্ট্রিট, কাটোয়া, কামদুনি, মধ্যমগ্রাম, ধূপগুড়ির মতো একাধিক ঘটনা তার উদাহরণ।’’ স্বচ্ছ ও সংবেদনশীল সরকার গড়ার লক্ষ্যে মীনাক্ষী, দীপ্সিতা, ঐশী ঘোষদের মতো সংযুক্ত মোর্চার তরুণ প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন বৃন্দা।
নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর বিপরীতে মাটি কামড়ে মানুষের রুটি-রুজির কথা বলে যে ভাবে লড়াই করেছেন সিপিএম প্রার্থী এবং ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী, তার জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বৃন্দা। দীপ্সিতাও বলেছেন, মীনাক্ষীর লড়াইয়ে তাঁরা সকলেই অনুপ্রাণিত। দল বদলের ঢেউয়ে তাঁরা ভেসে যাবেন না। দীপ্সিতার বক্তব্য, বাংলায় বিজেপিকে জমি তৈরি করে দিতে সাহায্য করেছে তৃণমূল, ওই দুই শক্তির বিরুদ্ধে এবং বাংলার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে বামেদের নতুন প্রজন্ম ময়দানে নেমেছে। সভায় ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও।
চতুর্থ ভোটের প্রচারের শেষ দিনে বালির আগে চাঁপদানির কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুল মান্নান এবং ভাঙড়ে আইএসএফ প্রার্থী নওসাদ সিদ্দিকির সমর্থনে আরও দু’টি সমাবেশে বক্তা ছিলেন মীনাক্ষী। চাঁপদানি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে শেওড়াফুলিতে জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লড়াই কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। আমাদের লড়াই নীতির, আদর্শের। যারা রাজ্যটাকে জাহান্নামের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাইছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সেই লড়াইয়ে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র-যুবরা কোমর বেঁধে নেমেছে। কে কত বাপের ব্যাটা আছে, তারা মাঠে নেমে দেখুক! জিতব আমরা, শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’
গ্যাস এবং পেট্রলের দাম প্রসঙ্গে মোদী সরকারকে তুলোধোনা করেন মীনাক্ষী। তাঁর কথায়, ‘‘বেকার যুবকদের হাতে কাজ নেই আর কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করতে শুরু করেছে। বাজপেয়ী বলতেন, রাষ্ট্রীয় সংস্থা চালানো সরকারের কাজ নয়। দু'কদম এগিয়ে মোদী বলছেন, যে রাষ্ট্রীয় সংস্থা জন্মেছে, তাকে এক দিন মরতেই হবে। সরকারি জায়গা তুমি চালাবে না, তা হলে সরকারে আছো কেন?’’