চা খাওয়ার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
বহরমপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য সুব্রত মৈত্র ওরফে কাঞ্চন। যাঁর নাম বহরমপুর বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই স্বস্তিতে নেই দল। প্রকাশ্যে সে কথা নেতারা স্বীকার না-করলেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে তাঁর ভোটে জেতার পক্ষে অন্তরায়, তা ইশারা-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিতেও ছাড়ছেন না বিজেপি কার্যকর্তাদের একাংশ। আর জেলায় নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই ওই কেন্দ্রে ভোটের লড়াই কঠিন হচ্ছে কাঞ্চনের। বহরমপুরে মঙ্গলবার দিলীপ ঘোষের প্রাতর্ভ্রমণেও ছিল সেই
কোন্দলের ছায়া।
জঙ্গিপুর থেকে নির্বাচনী সভা শেষে সোমবার হঠাৎ বহরমপুরে একটি হোটেলে রাত্রিবাসের সিদ্ধান্ত নেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে প্রাতর্ভ্রমণেও বেরোন। কিন্তু তাঁর ঘন্টাখানেক প্রাতর্ভ্রমণে সঙ্গী বিজেপি কর্মীর সংখ্যা ছিল যথেষ্ট কম। বহরমপুরের বিজেপি প্রার্থী তথা বহরমপুর পুরসভার পর্যবেক্ষক সুব্রত মৈত্র ওরফে কাঞ্চন বলেন, “রাজ্য সভাপতির হঠাৎ কর্মসূচি মঙ্গলবারের প্রাতর্ভ্রমণ। যারা আসতে পেরেছি তারাই তাঁর সঙ্গে ছিলাম।” অথচ নভেম্বরে দিলীপের প্রাতর্ভ্রমণ এবং চা খেতে খেতে নগরের মানুষের সঙ্গে গল্প করার চর্চা এখনও বহরমপুরে হয়।
বিজেপির দাবি, প্রার্থী পছন্দ না হওয়াতেই পদ্মের পালে হাওয়া কম বহরমপুরে। নাম অপ্রকাশিত থাকার শর্তে এক বিজেপি নেতা বলেন, “কাঞ্চন মানুষের কাছে দলীয় প্রতীকের বদলে ভোট চাইছেন তাঁর সংগঠন ক্ষুদিরাম পাঠাগারকে সামনে রেখে। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।” কাঞ্চন বলছেন, “ক্ষুদিরাম পাঠাগার আমার প্রথম পরিচয়। সেই পরিচয়কে অস্বীকার করি কী করে?”
জেলায় এখনও রক্তের আকাল হলে ডাক পড়ে প্রায় বছর ৪০ আগে তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের। এখনও পাঠাগারের কার্যালয়ের দেওয়ালে উজ্জ্বল ‘নো পলিটিক্স’ কথাটি। এখনও ওই সংস্থায় অধীর চৌধুরীর দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবহার হয়। তৃণমূল কিংবা বিজেপির কার্যকর্তারাও সময়ে-অসময়ে এই সংস্থার সদস্যদের ডাকেন বলে জানান ওই সংস্থার বর্তমান সম্পাদক নীলেন্দু সাহা। যদিও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সংস্থার ‘দু্র্নাম’ও। তা অবশ্য স্বীকার করেন না বর্তমান সদস্যরা।