রাস্তা অবরোধে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
ভোটের প্রচারে সিপিএমের প্রার্থী প্রথম নিশানা করছেন বিজেপির প্রার্থীকে। কিন্তু প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলের হুমকি ও হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে, এই অভিযোগে এ বার রাস্তা অবরোধে বসলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ জানানো হল নির্বাচন কমিশনের কাছেও। থানায় বিক্ষোভ এবং রাস্তা অবরোধে দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে শামিল হয়েছিলেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা বসু ঘোষ এবং সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি। তারই পাশাপাশি, বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের সাম্প্রতিক নবান্ন অভিযানে গিয়ে পুলিশের মারে আহত ও মৃত ডিওয়াইএফআই কর্মী মইদুল ইসলাম মিদ্যার মা তহমিনা বিবি নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে আবেদন করলেন মীনাক্ষীকে জেতানোর জন্য।
বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাসিন্দা তহমিনা বলেছেন, ‘‘কাজের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে আমার ছেলে প্রাণ দিয়েছে। আমার মেয়ে মীনাক্ষী ভোটে দাঁড়িয়েছে সকলের জন্য কাজের দাবিতে। মেয়েটা জিতলে আমার ছেলের মৃত্যুর বিচার পাওয়া যাবে।’’ তহমিনার আরও বক্তব্য, ‘‘নন্দীগ্রামে অন্য দু’জন প্রার্থী আছেন, তাঁরা অনেক মিথ্যা কথা বলছেন। ওঁদের কথায় বিশ্বাস করবেন না!’’ প্রসঙ্গত, মীনাক্ষী এখন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী। নবান্ন অভিযানের দিন পুলিশের মারের মুখে সহকর্মীদের আগলানোর চেষ্টার পাশাপাশি মইদুলের পরিবারের কাছেও তিনি একাধিক বার গিয়েছেন।
নন্দীগ্রামে এ বার তুলকালাম লড়াই মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর। সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী টোটোয় চেপে নন্দীগ্রামের দুই ব্লকের গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। সিপিএমের অভিযোগ, শনিবার দাউদপুরে তৃণমূলের বাধা ও হুমকির মুখে পড়েন মীনাক্ষী। ওই এলাকায় সিপিএম প্রার্থী প্রচার করলে তৃণমূলের অসুবিধা হবে বলে জানিয়ে মীনাক্ষীকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় ‘মারাত্মক পরিস্থিতি’র। ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তুলে রবিবার নন্দীগ্রাম থেকে টেঙ্গুয়া যাওয়ার রাস্তায় অবরোধে বসেন মীনাক্ষী-সহ সংযুক্ত মোর্চার কর্মী-সমর্থকেরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা চণ্ডীপুরে সভা করতে পৌঁছনোর আগেই অবরোধ হয় নন্দীগ্রামে। মীনাক্ষী বলেন, ‘‘পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও এক জন প্রার্থীকে হেনস্থা করা হচ্ছে। প্রচার তো সবাই করতে পারে। ঘটনার পরে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বোঝা যাচ্ছে, কোনও বাহিনী বা প্রশাসন কোনও কাজ করছে না।’’
ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত নন বলে দাবি করেছেন শাসক দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তবে মীনাক্ষীর নির্বাচনী এজেন্ট রামহরি পাত্র যে ভিডিয়ো কমিশনে জমা দিয়েছেন, তাতে আব্বাস বেগ নামে তৃণমূলের স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যকে দেখা গিয়েছে। মীনাক্ষীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, আরও আড়াইশো বুথ আছে, সেখানে যান। এখানে এলে তৃণমূলের অসুবিধা হবে। তিনি এখানে আসবেন, এটা আগে জানা থাকলে ‘মারাত্মক পরিস্থিতি হত! জবাবে মীনাক্ষীও বলেন, ‘চাল-চোর, ত্রিপল-চোর’দের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য তিনি এখানে আসেননি!