—প্রতীকী ছবি।
গত বিধানসভা ভোটে বারাবনি আসনে পরাজিত হয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী। বাম-কংগ্রেস জোট শিবিরের খবর, ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দলীয় প্রার্থী না থাকায় কংগ্রেসের ভোটারদের বড় অংশের ভোট গিয়েছিল তৃণমূলের ঝুলিতে। এ বার আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়েছে বামেরা। প্রার্থী হয়েছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা রণেন বাগচী। এই পরিস্থিতিতে গত বার পাওয়া কংগ্রেসের ভোট কতটা নিজেদের দিকে থাকবে, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।
সিপিএমের অন্দরমহলের খবর, ‘বাস্তব পরিস্থিতি’ বিবেচনা করে বারাবনি আসনটি নিয়ে ‘জেদাজেদি’ করা হয়নি। কংগ্রেসের তরফেও ওই আসনটি দাবি করে হয়েছিল বলে দলীয় সূত্রে খবর। কংগ্রেসের তরফে বামেদের বলা হয়েছিল, বারাবনিতে তাদের সাংগঠনিক শক্তি বেশি।
কেন আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়া হল? সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের যুক্তি, ‘‘যেখানে যার সাংগঠনিক শক্তি বেশি, সেখানে তাদেরই প্রার্থী করা হয়েছে।’’ আর জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘বারাবনির অনেক জায়গায় কংগ্রেসের পকেট ভোট আছে, যা ‘হাত’ চিহ্ন ছাড়া অন্য কোথাও পড়বে না।’’ আশাবাদী রণেনবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী সব ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে পড়বে এ বার।’’
বারাবনির অন্তর্গত সালানপুর ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতে সাংগঠনিক শক্তির বিচারে তৃণমূলের পরেই কংগ্রেস। চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কসে শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-ও বেশ শক্তিশালী। চিত্তরঞ্জন রেল শহরের বাসিন্দা ওই শ্রমিক সংগঠনের সদস্য ও তাঁদের পরিবারের ভোট বারাবনি আসন এ বার নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। আইএনটিইউসি-র কার্যকরী সভাপতি নেপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ বার কংগ্রেসের প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন বলে আমরা তাঁর সমর্থনে প্রচার করছি। আইএনটিইউসি-র সদস্য-সমর্থকদের কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করছি।’’ বাম-কংগ্রেস শিবিরের খবর, গত বিধানসভা আসনের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সালানপুরের বহু জায়গায় (যেখানে কংগ্রেসের শক্তি তৃণমূলের থেকে বেশি) জোটপ্রার্থী তৃণমূলের থেকে কম ভোট পেয়েছিলেন। একই চিত্র দেখা যায় চিত্তরঞ্জন রেল শহরেও।
গত লোকসভা ভোটের নিরিখে বারাবনি কেন্দ্রে বিজেপির চেয়ে ১৭ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সালানপুর থেকে ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে যত ভোট তৃণমূলের ঝুলিতে পড়েছিল, গত লোকসভা নির্বাচনে ওই এলাকা থেকে তৃণমূল পায় তার থেকে ১৬ হাজার কম ভোট।
এই পরিস্থিতি বিচার করে এক জেলা তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘বারাবনিতে কংগ্রেস প্রার্থী দেওয়ায় সালানপুরে কংগ্রেসের ভোট তাঁর ঝুলিতে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। আমরা ভেবেছিলাম, বারাবনিতে সিপিএম প্রার্থী দেবে।’’ তবে জয় সম্পর্কে প্রত্যয়ী বিধানবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উন্নয়নের কাজে সময় দিয়েছি। মানুষ তা মনে রাখবেন।’’ তৃণমূলের বারাবনি ব্লক সভাপতি অসিত সিংহের আশা, ‘‘সালানপুর ব্লক থেকে আমরা কম ভোট পাব না। যদি তা পাই, তবে তা পুষিয়ে দেবে বারাবনি ব্লক।’’ বিজেপি প্রার্থী অরিজিৎ রায়ের দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটের চেয়েও ব্যবধান বাড়বে বারাবনিতে।’’