প্রার্থী নিয়ে কোন্দল বন্ধ হল না রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে।
ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে একুশের মহারণ। এপ্রিলের সাত তারিখের মধ্যে ভগবানগোলা সহ মুর্শিদাবাদের বাইশ আসনের প্রার্থীরাও মনোনয়ন জমা দেবেন। অথচ এখনও প্রার্থী নিয়ে কোন্দল বন্ধ হল না রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে। তবে ভগবানগোলা আসনে প্রার্থী নিয়ে অন্য দলের তুলনায় শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের ক্ষোভ এখনও বর্তমান।
ভগবানগোলা কেন্দ্রে এ বার লড়াই হচ্ছে মূলত তিন দলের। তৃণমূলের ইদ্রিশ আলি, সংযুক্ত মোর্চার বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী সিপিএমের কামাল হোসেন, আর বিজেপি ওই আসনেই প্রার্থী করেছে মহম্মদ মেহবুব আলমকে। ওই এলাকার তিন দলের প্রার্থী নিয়েই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে নিজের নিজের দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। তৃণমূলের ক্ষেত্রে অভিযোগ ‘বহিরাগত’ প্রার্থী, বিজেপি’র ক্ষেত্রে অভিযোগ প্রার্থীর দলীয় কর্মসূচিতে না আসা এমনকি সংগঠন না করার আর বিদায়ী বিধায়ক মহসিন আলীকে প্রার্থী না করার ক্ষোভ বামেদের অন্দরে।
বামেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিন বিদায়ী বিধায়ক মহসিন আলী তাঁর জায়গায় একুশের নির্বাচনে অংশ নেওয়া তরুণ মুখ কামালকে মালা পরিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। অথচ মন থেকে তা মেনে নিতে পারেন নি মহসিন আলীর সমর্থকরা। ক্ষোভ সামনে আসতেই কুশলী বাম নেতারা অবশ্য কৌশলে তা চাপা দিয়ে ভোট প্রচারে নামিয়ে দিয়েছেন প্রার্থীর পক্ষ বিপক্ষ দুই শিবিরকেই। পোড় খাওয়া মহসিন নবাগত কামাল হোসেনের পাশে দাঁড়িয়ে এদিন বলেন, “দলে কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভের কথা আমার জানা নেই। এই আসন আমাদের দখলেই থাকবে।”
প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগে থেকেই ওই এলাকার তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের দাবি ছিল ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করার। কিন্তু ভিন জেলার ইদ্রিশ আলীকে প্রার্থী করেছে দল। যা নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভের মধ্যেই গোঁসা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের আদি নেতা সাগির হোসেনের। বিক্ষুব্ধ ওই নেতার মানভঞ্জনের চেষ্টা করতে প্রার্থীও এসেছিলেন তাঁর কাছে। কিন্তু তৎক্ষণাৎ তাঁকে প্রতি নমস্কার জানিয়ে বিদায় দিয়েছেন সাগীর, দাবি সুত্রের। সাগির বলছেন, “সবাই বলছে এবারের নিশ্চিত জেতা আসন তৃণমূল হারবে বহিরাগতের জন্য। জানি না ভবিষ্যৎ কী হবে?”
সেই গরম হাওয়ায় নতুন ইন্ধন ওই এলাকার বিজেপি’র প্রার্থী নিয়ে বিক্ষোভ। বিজেপি’র পুরনো নেতা মেহবুব আলমকে প্রার্থী করেছে দল। যিনি ২০১১ ও ২০১৬ সালে ভগবানগোলা আসনেই বিজেপির হয়ে নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন। অথচ তাঁর নামে অভিযোগ, সংগঠনে সময় না দেওয়ার। মেহবুব বলেন, “প্রার্থীপদে মনোনীত না হওয়ায় এই ধরনের অপবাদ দিচ্ছেন দলের কেউ কেউ।”
পিছিয়ে পড়া মুর্শিদাবাদের এই অঞ্চলে ৮৬ শতাংশ মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের বাস। তিন দলের এই অন্তঃকলহের সুযোগে এলাকায় নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছেন তিন দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের কেউ কেউ। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তিন দলের এই কর্মী অসন্তোষের প্রভাব পড়বে ওই এলাকার নির্বাচনে।