West Bengal Assembly Election 2021

WB election 2021: প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ, ঘরবন্দি ছত্রধরও

তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর যে ভাড়ার গাড়িতে চড়েন, সেটি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের কাজে টেনে নিয়েছে প্রশাসন। অথচ ছত্রধর উদ্যোগী হয়ে গাড়িটি ছাড়াননি।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২১ ০৬:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

Advertisement

জঙ্গলমহলের তিন জেলায় ভোটে শাসকদলের সারথি ছত্রধর মাহাতোই সারথি-বিহীন! ভোটের কাজে ছত্রধরের ভাড়ার গাড়ি টেনে নিয়েছে লালগড়ের পুলিশ-প্রশাসন। ফলে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো এখন লালগড়ের আমলিয়া গ্রামের বাড়িতেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন।

শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে ঝাড়গ্রাম জেলায় লক্ষ্যণীয়ভাবে একাংশ নেতা-কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন বলে খবর। কেউ কেউ প্রার্থী হতে না পেরে ক্ষুব্ধ। কারও আবার দলের টিকিট পাওয়া প্রার্থী পছন্দ হয়নি। সমাজমাধ্যমেও একাংশ তৃণমূল কর্মীর পোস্টে ক্ষোভের আঁচ। তবে কি ছত্রধরও অভিমানে ‘ঘরবন্দি? জল্পনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর যে ভাড়ার গাড়িতে চড়েন, সেটি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের কাজে টেনে নিয়েছে প্রশাসন। অথচ ছত্রধর উদ্যোগী হয়ে গাড়িটি ছাড়াননি। দলের অন্দরের খবর, শীর্ষস্তর থেকে ছত্রধরকে প্রার্থী করায় সম্মতি ছিল। কিন্তু ইউএপিএ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে তাঁর প্রার্থী হওয়ায় প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তাই স্ত্রী নিয়তিকে প্রার্থী করতে দরবার করেছিলেন ছত্রধর। নিয়তি অবশ্য টিকিট পাননি। ঝাড়গ্রাম আসন অসংরক্ষিত হলেও সেখানে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) ছেড়ে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া সাঁওতালি সিনেমার মহানায়িকা বিরবাহা হাঁসদা প্রার্থী হয়েছেন। গোপীবল্লভপুরে প্রার্থী প্রাক্তন সাংসদ তথা জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র উমা সরেন গোষ্ঠীর চিকিৎসক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো। আর আদিবাসী সংরক্ষিত নয়াগ্রাম কেন্দ্রে এই নিয়ে তৃতীয়বার টিকিট পেলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু। অন্যদিকে আদিবাসী সংরক্ষিত বিনপুরে প্রার্থী হয়েছেন জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা। জেলার চার প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র দেবনাথের সঙ্গেই ছত্রধরের সম্পর্ক ভাল। ফলে, ছত্রধর বাড়িতে বসে থাকায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূলের নেতারা।

এ দিকে, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় দলের প্রচারের দায়িত্ব ছত্রধরকে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। গত কয়েকদিন ধরে পড়শি জেলায় গিয়ে প্রচারও করেছেন ছত্রধর। তবে এখন ছত্রধর বলছেন, ‘‘আমি ভাড়ার গাড়িতে চড়ি। ভোটের কাজে সেই গাড়ি নিয়েছে প্রশাসন। তাই বাড়িতে আছি। চারজন নিরাপত্তা রক্ষী নিয়ে বাইকে চেপে ঘুরে বেড়ানোয় সমস্যা রয়েছে। দল থেকে প্রচারে ডাকা হলে অবশ্যই যাব।’’

নিয়তি প্রার্থী না হওয়ায় কি তিনি ক্ষুব্ধ? ছত্রধরের জবাব, ‘‘কর্মীরা হয়তো ব্যক্তিগত মতামত দিচ্ছেন। তবে এটা কোনও ব্যক্তিগত খুশি-অখুশির বিষয় নয়। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’ তবে সূত্রের খবর, ছত্রধরের এক সময়ের ছায়াসঙ্গী লালগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মাহাতোর মতো জেলার অনেক নেতাই ক্ষুব্ধ। সমাজমাধ্যমে কেউ কেউ লিখছেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম জেনারেল সিট, তাও আমাদের কোনও জায়গা নেই, যাঁরা এতো দিন ধরে পরিশ্রম করে দলটাকে দাঁড় করালেন তাঁরাই বাদ।’’

শনিবার জেলার চার প্রার্থীকে কলকাতায় তলব করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। মনোনয়ন সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁদের। প্রার্থীদের সঙ্গে জেলার চারটি বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতো ও উজ্জ্বল দত্ত অবশ্য কলকাতায় যাননি। গিয়েছিলেন জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা, জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি শান্তনু ঘোষ, শহর যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি উজ্জ্বলকান্তি পাত্র, জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি দুর্গেশ মল্লদেব, তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের নেতা জয়দীপ হোতা। উজ্জ্বল বিনপুর ও নয়াগ্রাম বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটর। আর অজিত হলেন ঝাড়গ্রাম ও গোপীবল্লভপুর বিধানসভার কো-অর্ডিনেটর। অজিত ঝাড়গ্রাম আসনের দাবিদার ছিলেন। উজ্জ্বল ছিলেন গোপীবল্লভপুরের দাবিদার। উজ্জ্বল বলছেন, ‘‘আমি তো প্রার্থী নই। তাই কলকাতায় যাইনি।’’ আর অজিতের দাবি, ‘‘দলীয় প্রার্থীদের প্রচার পরিকল্পনা নিয়ে দিনভর কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছি। তাই কলকাতায় যাইনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement