প্রতীকী ছবি।
ভোট গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে প্রার্থী ও কাউন্টিং এজেন্টদের করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট চাই। এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর এই নির্দেশের ফলেই সমস্যায় পড়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। ৩০ এপ্রিল ও ১ মে এই দু’দিনের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট বিধানসভা এলাকার রিটার্নিং অফিসারের দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে। সেই মতো রিটার্নিং অফিসারের দফতর থেকে প্রার্থী ও কাউন্টিং এজেন্টদের পরিচয়পত্র ও করোনা পরীক্ষার শংসাপত্র দেওয়া হবে।
প্রশ্ন উঠছে, মাত্র দু’দিনের মধ্যে কী ভাবে বিপুল সংখ্যক কাউন্টিং এজেন্ট ও প্রার্থীদের করোনা পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব?
২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গণনা। ওই দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ৩১টি আসনের ভোট গণনা হবে ১২টি কেন্দ্রে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি প্রার্থী পিছু ৩২ জন কাউন্টিং এজেন্ট ভোট গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রতি প্রার্থী পিছু অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ কাউন্টিং এজেন্টের করোনা পরীক্ষা করানোর কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রার্থী পিছু ৪২ জনের করোনা পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট দেওয়া হবে। তবে গণনা কেন্দ্রে প্রার্থী পিছু কেবলমাত্র ৩২ জনকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী-সহ কাউন্টিং এজেন্ট মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার জনের করোনা পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর জন্য রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কাউন্টিং এজেন্টদের র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। অভিযোগ, কিটের সমস্যার কারণে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই সঙ্গে বিভিন্ন প্যাথলজি ল্যাবে বিপুল সংখ্যক লালারসের নমুনা জমা পড়ায় আরটিপিসিআর টেস্টও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রতিদিন র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ও আরটিপিসিআর মিলিয়ে গড়ে প্রায় দু’হাজার পরীক্ষা করানো হত। ল্যাব ও কিটের সমস্যার কারণে সেই সংখ্যাটা কমিয়ে ৭০০ করার কথা বলা হয়েছে মৌখিক ভাবে। কেবলমাত্র যাঁদের জ্বর ও করোনার উপসর্গ রয়েছে, তাঁদেরই করোনা পরীক্ষার করার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভাঙড়ের নলমুড়ি হাসপাতলে করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত। সেই কারণে আমার পরীক্ষা করাতে গিয়েছিলাম। যদিও আমার কোনও উপসর্গ নেই। হাসপাতাল থেকে বলা হল, উপসর্গ না থাকলে পরীক্ষা করানো হবে না।’’ ভাঙড়ের জিরানগাছা, নলমুড়ি, জীবনতলা মঠের দিঘি-সহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে একই চিত্র। উপসর্গ না থাকলে করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে না। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী বিপুল সংখ্যক রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কাউন্টিং এজেন্টদের করোনা পরীক্ষা করাতে গেলে সাধারণ মানুষকে আরও সমস্যায় পড়তে হবে বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ক্ষেত্রে কিটের কিছু সমস্যা রয়েছে। এ জন্য স্বাস্থ্য ভবনের কাছে অতিরিক্ত কিট চাওয়া হয়েছে।’’