প্রচারে পান্ডুয়ার সিপিএম প্রার্থী আমজাদ হোসেন। ছবি: সুশান্ত সরকার।
রাজ্যে পালাবদলের বছরে (২০১১) এ তল্লাটের ‘লাল দুর্গ’ অটুট ছিল।
২০১৬-তেও একই ছবি।
এ বার কী হবে, সময় বলবে। তবে, জেলার বামনেতারা মানছেন, দু’-দু’বার পান্ডুয়ায় ‘দুর্গ’ রক্ষার লড়াই পুরোপুরি সংগঠন দিয়ে হয়নি। কাজ করেছে প্রার্থী আমজাদ হোসেনের ভাবমূর্তি। তাই এ বারও পান্ডুয়া জিততে তাঁর উপরেই বাজি রেখেছে তাঁর দল সিপিএম।
প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক, মধ্য চল্লিশের আমজাদ সাদামাটা জীবনযাপন করেন। একটা গাড়িও নেই। বাইক আছে। মান্ধাতা আমলের। সময় পেলেই তাতে চড়ে এলাকায় চক্কর কাটেন। বিধানসভায় যান লোকাল ট্রেনে। জয়পুর রোডের রেলগেট এলাকায় পৈতৃক একতলা বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে থাকেন। পাশেই ব্যাঙ্ক-ঋণের টাকায় নিজের বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু সে দিকে নজর দেওয়ার সময় পেলে তো!
সকাল থেকেই তাঁর কাছে নানা প্রয়োজনে মানুষের ভিড় জমে। মন দিয়ে সকলের কথা শোনেন আমজাদ। সাধ্যমতো সকলের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করেন। মিষ্টভাষী যুবকটি কাজের ক্ষেত্রে দল বিচার করেন না, এ কথা পান্ডুয়ায় কান পাতলেই শোনা যায়। দু’বারের বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও কোনও রকম দুর্নীতির ‘কালো ছোপ’ তাঁর গায়ে লাগাতে পারেননি বিরোধীরা। উল্টে তাঁর ব্যাপারে অনেকটা সমীহ করেই তাঁরা মতামত দেন।
আমপানের সময়ে আমজাদকে পাশে পেয়েছেন পান্ডুয়াবাসী। লকডাউনেও। অনেকেই মনে করেন, এই সিপিএম প্রার্থীর ব্যক্তিগত ‘ইমেজ’ই পান্ডুয়ায় বিরোধীদের সঙ্গে বার বার তাঁর জয়ের ফারাকটা গড়ে দিচ্ছে। শেখ মামুন হাসান নামে ওই এলাকার এক ব্যেবসায়ীর কথায়, ‘‘লকডাউনের সময় দেখেছি, আমজাদ সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন। রাজনীতিতে এমন মানুষকেই সবাই চান, যিনি বিপদে পাশে থাকবেন।’’ গৌতম ভট্টাচার্য নামে আর এক ব্যষবসায়ী বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে ওঁর সঙ্গে পরিচয়। আমি বলতে পারি, মানুষটি নিজের ইমেজের জোরেই জেতেন।’’
না, নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চান না আমজাদ। কুন্ঠিত বোধ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট হচ্ছে পরীক্ষা। আমি এতদিন কী কাজ করলাম, মানুষের পাশে কতটা থাকলাম? আমি আমার মতো চেষ্টা করেছি। এ বার মানুষের মতামত দেওয়ার সময় এসেছে।’’