প্রতীকী ছবি।
দলের বিরুদ্ধে কুৎসার অভিযোগ তুলে একটি নাটক মাঝপথে বন্ধ করে দিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তাদের ‘রক্তচক্ষু’র সামনে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কার্যত পালিয়ে বাঁচলেন। শনিবার এমনই অভিযোগ উঠল বাসন্তীতে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ থিয়েটার সেন্টারের ডাকে শনিবার বাসন্তীতে থিয়েটার সেন্টার লাগোয়া মাঠে নাটক করতে গিয়েছিল। ‘জনগণমন’ নামে একটি সংগঠন। নাটকের নাম— ‘ইঁদুরকল’। মঞ্চের আশপাশে সিএএ-এনআরসি, নয়া কৃষি আইন বিরোধী পোস্টার-ফ্লেক্স লাগানো হয়েছিল। অভিযোগ, বিকেলে নাটক শুরুর আগে বিজেপি নেতা এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অরবিন্দ হালদার ও এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যরা সেখানে চড়াও হন। কেন ওই পোস্টার, ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে, তার কৈফিয়ত চাওয়া হয়। সেগুলি ছিঁড়ে দেওয়া হয়।
ওই পরিস্থিতিতেই নাটক শুরু হয়। অভিযোগ, নাটক কিছুটা গড়াতেই ফের ওই যুবকদের হুমকি শুরু হয়। নাটকের গানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অপমান এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসার অভিযোগ তুলে তারা মারমুখী হয়ে ওঠে। নাট্যকর্মীদের প্রাণে মেরে ফেলার শাসানি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ফলে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়ে নাটক বন্ধ করে দেন নাট্যকর্মীরা। দর্শকরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নাট্যকর্মীরা স্থানীয় একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। নাটকের দলে কয়েকজন মহিলাও ছিলেন।
তাঁরা জানান, ভোরবেলা সেখান থেকে কার্যত লুকিয়ে পালিয়ে কলকাতা ফিরতে হয় তাঁদের। রবিবারেও তাঁদের একটি নাটক করার কথা ছিল। সেটি বাতিল করা হয়। রবিবার নাট্যকর্মী শুভঙ্কর দাশশর্মা বলেন, ‘‘এই ধরনের নাটক পশ্চিমবঙ্গের কোথাও করা যাবে না বলে হুমকি দেওয়া হয় আমাদের। আতঙ্কে সারারাত জেগে কাটিয়েছি সবাই।’’ তাঁর সঙ্গী অমিত সাহা বলেন, ‘‘সবাই এতটাই ভয় পেয়েছিলেন যে,থানায় যাওয়ারও সাহস হয়নি।’’
নাটক বন্ধ করে দেওয়ায় অবশ্য কোনও অন্যায় দেখছেন না পঞ্চায়েত সদস্য অরবিন্দ হালদার। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে অনুমতি ছাড়া কী ভাবে নাটকের নামে বিজেপি বিরোধী প্রচার করেন ওঁরা? নাটকে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের বিরুদ্ধে ভুল বোঝানো হচ্ছিল। সেই কারণেই গ্রামবাসী একজোট হয়ে বাধা দিয়েছেন।’’