গলসির অপসারিত বিজেপি প্রার্থী তপন বাগদি। নিজস্ব চিত্র।
সদলবলে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি (এসসি) বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী তপন বাগদি। কিন্তু দলের নির্দেশে মনোনয়ন জমা না দিয়েই ফিরতে হল তাঁকে। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করেছে বিজেপি। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গলসিতে প্রার্থী হতে পারেন বিকাশ বিশ্বাস।
সোমবার সকালে বর্ধমান আদালত চত্বরে সঙ্গীদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে এসেছিলেন তপন। দু’দিন আগেই তপন অভিযোগ করেছিলেন, জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা এবং সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলেছেন। কেন্দ্রীয়ভাবে তাঁর নাম ঠিক হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্ব নাম খারিজ করায় জেলা দফতরের সামনে আত্মহত্যার হুমকিও দেন তপন। শুক্রবার তিনি মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথাও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাই মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছি।’’ এরপর সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে ঢুকলেও কিছুক্ষণ পরে তপন মনোনয়ন জমা না দিয়ে বেরিয়ে যান।
তপন পরে জানান, মনোনয়নের কাগজপত্র জমা দেবার সময় সহকর্মীরা তাঁকে বাইরে ডাকেন। তাঁরা কী বলতে চান, তা শোনার জন্য তিনি জমা না দিয়েই বেরিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রতীক চেয়েছিলাম। কিন্তু এখনও পাইনি। আজ প্রতীক ছাড়াই মনোনয়ন জমা দিতে এসেছিলাম।’’
তপন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডাকে নিয়ে গঠিত কমিটি আমার মত একজন গরিব, সাধারণ কর্মীকে মনোনীত করেছেন। আমি আপ্লুত। ভেবেছিলাম, পরে প্রতীক নেব।’’
এই নাটকীয় ঘটনা নিয়ে বিজেপি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা জানান; এ বিষয়ে তার কিছু বলার নেই। যা ঠিক হবার কেন্দ্রীয়ভাবেই হবে। অন্যদিকে, কিছুদিন আগে তৃণমূলে দেওয়া প্রাক্তন সাংসদ সুনীল মণ্ডল জানিয়েছেন, গলসি কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করা হয়েছে।
প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরেই গলসি-সহ বিভিন্ন এলাকার বিক্ষুদ্ধ বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা দলের জেলা দফতরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। দফতরহ ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। কয়েকজন আহত হন ওই ঘটনা। তার জেরে জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী-সহ ১২ জনকে ‘শো কজ’ করেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। এরপর সরিয়ে দেওয়া হয় সন্দীপকে। নতুন সভাপতি হন অভিজিৎ তা। ঘটনাচক্রে, সোমবারই বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সন্দীপের বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা স্মৃতিকান্ত মণ্ডল।