সোমবার হুইল চেয়ারে করে জনসংযোগে নেমেছিলেন মমতা। শুভেন্দু বললেন, ‘‘ও সব নাটক।’’ গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
নন্দীগ্রামের গণহত্যা নিয়ে রবিবারই শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারীকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অভিযোগ উড়িয়ে সোমবার শুভেন্দু বললেন, ‘‘ফেরেব্বাজ মুখ্যমন্ত্রী। ওঁর নন্দী মা বইটি পড়ুন। তা হলেই বুঝতে পারবেন ওঁর দ্বিচারিতা।’’ নন্দীগ্রামে শেষ বেলার ভোটপ্রচার এখন তুঙ্গে। একদিকে মমতা যেমন পরপর সভা, রোড শো করছেন, তেমনই সোমবার মোট ৫টি পথসভা করছেন শুভেন্দু। সেই সভার ফাঁকে জনসংযোগের মধ্যেই তৃণমূল নেত্রীকে তীব্র আক্রমণ করলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী।
সোমবার হুইল চেয়ারে করে জনসংযোগে নেমেছিলেন মমতা। শুভেন্দু বললেন, ‘‘ও সব নাটক।’’ সাংবাদিকরা এর পরেই তাঁকে মমতার অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞাসা করেন। নন্দীগ্রামে পুলিশ ঢুকতে দেওয়ার সঙ্গে অধিকারী পরিবারের নাম জড়িয়ে মমতা উস্কে দিয়েছিলেন বিতর্ক। শুভেন্দু সে সব নস্যাৎ করে দিয়ে বললেন, ‘‘উনি নিজে লিখেছেন না অন্য কাউকে দিয়ে লিখিয়েছেন জানি না, তবে ওঁর নন্দী মা (বই)-টি উনি নিজে পড়ুন। বইটি তো নিজের লেখা বলে দাবি করেন। আমার বিশ্বাস উনি লেখেন না, অন্য কাউকে দিয়ে লিখিয়ে নিজের নামে প্রচার করেন। পুরোটাই তো মিথ্যা। ফেরেব্বাজ মুখ্যমন্ত্রী। ‘নন্দী মা’-টা পড়ুন, তারপর ওঁর দ্বিচারিতা বুঝতে পারবেন। ও সব আর লোকে খাবে না। ওঁর কাছে লোকে চাকরি চাইছেন, চাকরি নেই। শিল্প চাইছেন, শিল্প নেই।’’
সোমবার নন্দীগ্রামে সরাসরি শুভেন্দুর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন মমতা । বলেন, ‘‘ভোটের সময় তুই আমার পা জখম করেছিস। আমি চেপে গেছি ভদ্রতা করে। আজও আমায় পা ভাঙা নিয়ে হুইলচেয়ারে বসে মিটিং করতে হচ্ছে। তোমার নির্দেশ ছাড়া এ সব হতে পারে না।’’ নন্দীগ্রামে আসার বিষয়েও অনেকদিন ধরেই অধিকারীদের আক্রমণ করেছেন তিনি। তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হত না আগে, অভিযোগ করেছিলেন তিনি। শুভেন্দুর পাল্টা জবাব, ‘‘যদি কেউ ঢুকতেই না দেয়, তা হলে প্রতিবার ভোটের সময় তিনি আসেন কেন? ২০১১, ২০১৬-এর ভোটের আগেও তো উনি এসেছিলেন। আবার ২০২১ সালের ভোটের আগে এসেছেন, এসে নিজে দাঁড়িয়েছেন।’’ শুভেন্দু সোমবার একই মিছিল থেকে নিমতার ঘটনা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ‘‘নিমতার ঘটনাটি একটি জাতীয় ইস্যু। এটি অমানবিক, বর্বোরচিত ঘটনা। ৮৫ বছরের বৃদ্ধাকে যে ভাবে মেরেছে বেগমের গুন্ডারা, তা নিন্দার কোনও ভাষা নেই। উনি পুলিশ মন্ত্রী, নারী সুরক্ষার কথা বলেন, কিন্তু একজনও গ্রেফতার হয়নি।’’
সকাল থেকে মমতা একের পর এক সভা, মিছিলে অংশ নিয়েছেন। হুইল চেয়ারে বসে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে ৮ কিলোমিটার পথ ঘুরেছেন তিনি। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণ বারবার বিদ্ধ করেছে শুভেন্দুকে। মমতার কথার সারমর্ম এটাই যে, এত পদ, এত সুযোগ দেওয়ার পরেও শুভেন্দু অধিকারী লোভে দল ছেড়েছেন। জবাবে শুভেন্দু বললেন, ‘‘ওঁর কথার কী উত্তর দেব? উনি প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করে কথা বলেন। আমার মানসিকতা নেই।’’