ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। ফাইল চিত্র।
প্রার্থীর সঙ্গে হাতে হাত ধরে ছবি তোলার পর দিনই ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম বললেন, ‘‘দল এমন একজনকে প্রার্থী করেছে, আমরা জানি, যাঁকে আমরা পাঁচ বছরে একবারও পাব না।’’
বৃহস্পতিবার ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারের সভা থেকে যখন এ কথা বলছেন আরাবুল, তখন তৃণমূল প্রার্থী রেজাউল করিম মঞ্চেই বসে। হাজির দলের জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী-সহ আরও নেতারা। তাঁদের উপস্থিতিতেই আরাবুল বলেন, ‘‘দলের নির্দেশ, আদেশ আমরা সব সময়ে মেনে চলি। কিন্তু দল আমাদের কোনও নির্দেশ, আদেশ মানে না।’’ দলের ‘নির্দেশ’ মেনে ঐক্যবদ্ধ ভাবে তৃণমূল ভাঙড়ে ভোটে লড়বে এ কথা বললেও আরাবুলের সংযোজন, ‘‘ভাঙড়ে আমরা জিতব সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। যদি এখানে পাকিস্তানের কোনও লোককে দাঁড় করিয়ে দেয়, তা-ও আমরা তাঁকে জেতাব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ভোটের পরে কে এল, কে গেল— তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা গত বিধানসভায় একজনকে পেয়েছিলাম (রেজ্জাক মোল্লা), যিনি গত পাঁচ বছরে একবারও আসেননি। আবারও দল একজন বাইরের লোককে প্রার্থী করেছে। আমরা জানি, তাঁকেও পাঁচ বছরে একবার পাব না। তবু জীবন বাজি রেখে দলকে জেতাব।’’
এ দিনই সভা সেরে ফেরার পথে বাসন্তী হাইওয়েতে দুর্ঘটনায় পড়ে রেজাউলের গাড়ি। লুকিং গ্লাসের কাচ ভেঙে চালক কার্তিক মালি জখম হন। যদিও থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি রেজাউল। পুলিশের অনুমান, একটি বাসকে পাশ দিতে গিয়ে টোটোর সঙ্গে ধাক্কা লেগে গাড়ির লুকিং গ্লাসের।
এ দিন সভার পরে শুভাশিস বলেন, ‘‘আরাবুল পাকিস্তানের কোনও লোককে প্রার্থী করার কথা বলেছেন বলে আমার কানে আসেনি। আরাবুলের যদি ক্ষোভ-আপত্তি থাকত, তা হলে মঞ্চে থাকতেন না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের সব মান-অভিমান দূর হয়ে গিয়েছে।’’ আরাবুল কিছুটা বেসুরো শোনালেও নান্নু হোসেন, ওহিদুল ইসলাম, কাইজার আহমেদরা এ দিন সভায় প্রার্থীর সমর্থনেই বক্তৃতা করেন। নান্নু বলেন, ‘‘আমাদের মনে যন্ত্রণা, আবেগ থাকতেই পারে। সব ভুলে দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে হবে।’’ কাইজার বলেন, ‘‘আমাদের ছোট্ট ভুলের কারণে ভাঙড়ে অঘটন ঘটে যেতে পারে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করতে হবে।’’
এ দিন রেজাউল বক্তৃতা করতে ওঠার সময়ে সভার ভিড় খালি হতে থাকে। রেজাউল বলেন, ‘‘ভাঙড়ের উন্নয়নের স্বার্থে আমি কাজ করব। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাব না। এখানে অনেকের ক্ষোভ, অভিমান আছে। সকলেই আমাকে কথা দিয়েছেন, তাঁরা আমার সঙ্গে থাকবেন।’’