পাণ্ডবেশ্বরে জনসভায় অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
নাম না করে পাণ্ডবেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট)। বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুরে নির্বাচনী জনসভায় তিনি উপস্থিত মানুষজনের কাছে আবেদন করেন, ‘‘কুমিরছানাকে আপনারা ভোট দেবেন না। এই কুমিরছানা এলাকার সব কিছু গিলে ফেলেছে। তাই কাফের, বেইমানকে নয়। তৃণমূল প্রার্থী নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন।’’ পরে সাংবাদিকদের ‘অবৈধ’ কয়লার কারবার সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি দাবি করেন, ‘‘কয়লা খেয়ে জিতেন্দ্র তিওয়ারির নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার পরে ইডি, সিবিআইয়ের ভয়ে দল ছেড়ে গিয়েছেন।’’
পাণ্ডবেশ্বরের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি দলের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন এবং ভোটের টিকিট পান। এই কেন্দ্রে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। এ দিন সভায় অনুব্রত বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রের বিধায়ক থাকার পরে দল ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিন্দা করছেন। একই ভাবে পাণ্ডবেশ্বরের মানুষ ও দলকে ধোঁকা দিচ্ছেন।’’ প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করা হলে জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘এমন নেতার কোনও বক্তব্যে মন্তব্য করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।’’ পাশাপাশি, নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী, অধুনা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে তাঁকেও আক্রমণ করেন কেষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘এক বেইমান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেগম বলছেন। তাঁর লজ্জা লাগছে না। মমতার বাবা ও মামার বাড়ি বীরভূমে। ব্রাহ্মণ বাড়ির মেয়ে।’’ সেই সঙ্গে কেন্দ্র সরকারের নানা নীতির বিরুদ্ধে সরব হন অনুব্রত। তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাবণের দেশ শ্রীলঙ্কায় পেট্রলের দাম ৪৯ টাকা, সীতার দেশ নেপালে ৪৭ টাকা। আর ভারতে প্রায় একশো টাকায় পেট্রল বিক্রি হচ্ছে।’’
হরিপুরের পরে এ দিন দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের লাউদোহা ফুটবল মাঠে অনুব্রতের নির্বাচনী জনসভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। তবে অনুব্রতবাবু সভাস্থলে আসেন এবং মঞ্চে উঠে সব দেখেন। তার পরেই সভা বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আবহাওয়ার কারণে এ দিন লাউদোহার সভা করা যায়নি। তবে অনুব্রতবাবু ফের আসবেন বলে জানিয়েছেন।’’