অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে বিজেপি-র শেষ পর্বের লড়াই শুরু আগামী রবিবার। সেই রবিবার, ৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড সমাবেশ দিয়েই শুরু হবে পদ্মশিবিরের প্রচার। তার আগে মঙ্গল ও বুধবার অমিত শাহর আসার কথা ছিল রাজ্যে। দু’দিনই মূলত তিনি কলকাতায় থাকবেন বলে ঠিক ছিল। কিন্তু শেষমুহূর্তে তা বাতিল হয়ে গেল। কারণ, মোদীর ব্রিগেড সমাবেশকে ‘চূড়ান্ত সফল’ করতে গোটা সপ্তাহটাই নিরবচ্ছিন্ন ভাবে দিতে চায় বিজেপি। চান অমিত নিজেও। তাই তিনি নিজেই কলকাতা সফর আপাতত বাতিল করেছেন তিনি। তবে ব্রিগেড সমাবেশের পর তিনি আবার আসবেন আপাতত স্থগিত সফরে। সোমবার দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, "ব্রিগেড সমাবেশকে ঐতিহাসিক রূপ দেওয়াই এখন আমাদের লক্ষ্য। তার আগে অমিত’জি নিজেই বড় কর্মসূচি চাইছেন না। এই সপ্তাহে তিনি আসছেন না। তবে আসবেন। ৭ মার্চের পরে।"
প্রসঙ্গত, দিল্লিতে বিস্ফোরণের কারণে এর আগে ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি রাজ্যসফর বাতিল হয়ে গিয়েছিল অমিতের। সেই পর্বের সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, ওই সফরেই তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতার। তবে সফর বাতিল হয়ে গেলেও অমিত তা অন্য ভাবে পূরণ করে দিয়েছিলেন। চাটার্ড বিমান পাঠিয়ে রাজীবদের দিল্লি উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ান অমিত। তার পর হাওড়ার ডুমুরজলার জনসভায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন। পাশাপাশি, স্থগিত সফর আবার করে ঠাকুরনগরে জনসভা থেকে বালিগঞ্জে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান কার্যালয়ে যাওয়া— সবই তিনি করে ফেলেন।
মঙ্গল ও বুধবারের সফরে মূলত কলকাতাতেই ঠাসা কর্মসূচি ছিল অমিতের। ঠিক ছিল, মঙ্গলবার কলকাতায় এসে টালা থেকে চৌরঙ্গি পর্যন্ত রোড-শো করবেন তিনি। তাঁর হাতেই কাকদ্বীপে সূচনা হওয়া কলকাতা জোনের ‘পরিবর্তন যাত্রা’-র সমাপ্তি হবে। সেখানেও থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার পরে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুর এলাকায় রোড-শো এবং হাজরা মোড়ে জনসভা করার কথা ছিল অমিতের। শেষবেলায় সফর বাতিল হওয়ায় সেই সব কোনও কর্মসূচিই আপাতত হচ্ছে না। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছিল, অমিতের এই সফরে কলকাতায় বড়মাপের যোগদানও হতে পারে। সে সবও কি তবে আপাতত স্থগিত? জবাবে দিলীপ বলেন, ‘‘যোগদান যেমন হওয়ার সব হবে। কী ভাবে কবে হবে, সেটা বদলাতে পারে। এর বেশি কিছু নয়।’’ অমিতের সফর বাতিল হলেও মঙ্গলবার পূর্বঘোষণা মতোই রাজ্যে আসছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। দক্ষিণবঙ্গ যখন ব্রিগেড নিয়ে ব্যস্ত, তখন উত্তরবঙ্গে যোগীর সমাবেশকে বড় রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।
শুধু অমিতের সফর বাতিল হওয়াই নয়, প্রতিদিন কোনও না কোনও জনসভায় যোগ দেওয়া দিলীপেরও সোমবার কোনও কর্মসূচি নেই। সকালে চা-চক্র সেরে বৈঠকে বসেছেন বিভিন্ন জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে। সূত্রের খবর, ব্রিগেডের প্রস্তুতি এবং সংগঠনের খবরাখবর নেওয়ার পাশাপাশি সোমবার জেলার সঙ্গে প্রার্থিতালিকা নিয়েও আলোচনা করতে পারেন দিলীপ। তাঁর সঙ্গে রাজ্যের শীর্ষনেতৃত্বের কয়েকজনও হাজির থাকবেন জেলাওয়াড়ি বৈঠকে।