শুভেন্দু অধিকারী এবং অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
সর্বশেষ খবর যা শোনা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার বাংলার বিধানসভা ভোটের জন্য প্রথম পর্যায়ের প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করবে বিজেপি। কারণ, দলের লক্ষ্য, প্রথম দু’দফার ভোটে যাঁরা প্রার্থী, তাঁদের আগামী রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড সমাবেশে হাজির করা।
বিজেপি-র রীতি অনুযায়ী দিল্লি থেকেই ঘোষণা করা হবে প্রার্থীদের নাম। সেই কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিল্লিতে দলের সংসদীয় কমিটি বৈঠকে বসবে। তাতে যোগ দিতে বুধবার কলকাতা থেকে রওনা দিলেন রাজ্য বিজেপি-র শীর্ষনেতৃত্ব। দুপুর পর্যন্ত জানা ছিল, সেই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সন্ধ্যায় দিল্লিগামী চার্টার্ড বিমানে ওঠেন তিনিও। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিত শাহ তাঁকে ‘বিশেষ ভাবে’ ডেকে পাঠিয়েছেন।
প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সোম-মঙ্গল-বুধ তিন দিন রাজ্য নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করেন। আদি ও নব্য বিজেপি নেতা-কর্মীদের সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক তালিকা তৈরির কাজ চলে। কিন্তু আগে থেকেই ঠিক ছিল, সেই তালিকা চূড়ান্ত করবেন অমিত। তিনিই ঠিক করবেন ২৯৪টি বিধানসভা আসনে কোথায় কে প্রার্থী হবেন। বিজেপি সূত্রে বৃহস্পতিবার বিকেলে জানা যায়, দিল্লিতে তালিকা চূড়ান্ত করার বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, মুকুল রায়। যাচ্ছেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ও সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই তালিকায় প্রথমে শুভেন্দুর নাম ছিল না। কিন্তু সন্ধ্যার পর জানা যায়, তিনিও চড়ছেন দিল্লিগামী চার্টার্ড বিমানে। বুধবার কলকাতায় দলের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ের বৈঠকেও শুভেন্দু ছিলেন না। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা এবং পূর্বের তমলুকে দলীয় কর্মসূচি ছিল তাঁর। জানা গিয়েছে, বিকেল নাগাদ শুভেন্দুর কাছে অমিতের ফোন আসে। শুভেন্দু যে দিল্লি যাচ্ছেন না, তা রাজ্য নেতাদের কাছে জানার পরেই অমিত শুভেন্দুকে ফোন করেন বলে জানা গিয়েছে। এক শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ জানিয়েছেন, ফোন করে অমিত শুভেন্দুকে অতি অবশ্যই দিল্লি যেতে বলেন। জানান, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তাঁর উপস্থিত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এর পরেই রাজ্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিল্লি যাওয়ার কথা জানান শুভেন্দু। রাত ৮ টায় কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বাকিদের সঙ্গেই বিমানে ওঠেন তিনি।
প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা বিতর্কের সম্মুখীন রাজ্য বিজেপি নেতারা। এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘একেকটি আসনের জন্য গড়ে পাঁচটি করে নাম এসেছে। বিভিন্ন নেতা যেমন নিজেদের পছন্দ জানিয়েছেন, তেমনই তার পাশাপাশি রয়েছে জেলা সংগঠনের তালিকা। এর উপরে সঙ্ঘ পরিবারের পছন্দের প্রার্থীরাও রয়েছেন তালিকায়।’’ সে সব ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়ে করানো কেন্দ্রীয় বিজেপি-র সমীক্ষার ফলাফলও তালিকায় স্থান পেয়েছে। অমিত অবশ্য অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, কার পছন্দ, কার তালিকা, তা না দেখে বিচার করা হবে কোন প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। সেই হিসেবে প্রার্থী বাছা হবে। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, রাজ্য নেতারা সেই নামের বোঝা থেকে সর্বসম্মত প্রাথমিক তালিকাও তৈরি করতে পারেননি। তাই প্রথম দু’দফা মিলিয়ে ৬০ আসনের জন্য শ’তিনেক নাম নিয়ে তাঁরা গিয়েছেন অমিতের দরবারে। সেখানেই পড়বে চূড়ান্ত সিলমোহর।