অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা (বাঁ দিকে) এবং অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেনের সঙ্গে পিন্টু দে (ডান দিকে)
নিজের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত উদ্ধার হল অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরার ব্যক্তিগত সহকারী পিন্টু দে-র (৩৪) দেহ। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকুড়গাছিতে। বুধবার সকালে সেই খবর নেটমাধ্যমে জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়ায় টলি-পাড়ায়। পুলিশের অনুমান, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। পরিবারের অভিযোগ, পিন্টুর কাছে টাকা চেয়ে নিয়মিত হুমকি বার্তা আসত। এই ঘটনার সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ রয়েছে কি না, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
টলি-পাড়ায় পিন্টু পরিচিত ছিলেন অঙ্কুশ- ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী ‘বাপ্পাদা’ হিসেবে। ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার পিন্টুর বাড়ি যান তাঁরা। পিন্টুর মৃত্যুর খবর ইনস্টাগ্রামেও তাঁরা ভাগ করে নেন নিজের অনুরাগীদের সঙ্গে। পরে অঙ্কুশ বলেন, ‘‘আগে টের পেলেই পদক্ষেপ করতাম।’’
পরিবারের অভিযোগ, নিয়মিত টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হত পিন্টুকে। পুলিশ জানিয়েছে, গত দেড় মাসে ভাগে ভাগে মোট ৩০ হাজার টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে অজ্ঞাত কাউকে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, এর জেরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন পিন্টু। আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে যোগাযোগ করা হলে অঙ্কুশ জানান, ঘুণাক্ষরেও তিনি সে সব কিছু টের পাননি। কেন আসত হুমকি বার্তা? অঙ্কুশের বক্তব্য, ‘‘এখনও তা জানা যায়নি।’’
এ দিন অঙ্কুশ আরও জানান, তাঁর কাছ থেকেও কয়েক বার টাকা নিয়েছিলেন পিন্টু। অভিনেতার দাবি, ধার শোধ করতে হবে বলেই সে টাকা চেয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত সহায়ক। অভিনেতা এ দিন বলেন, ‘‘খুবই সৎ মানুষ ছিলেন বাপ্পাদা। তাই যখনই টাকা চেয়েছেন, দিয়ে দিয়েছি। জানতাম, খারাপ কাজ করতেই পারেন না। টাকা চাওয়ার আসল কারণ বুঝতে পারলে এ ভাবে অসময়ে চলে যেতে দিতাম না।’’ ঐন্দ্রিলার খেদ, ‘‘ কী করে এমন কাজ করল বাপ্পাদা? নিজের মা আর বোনকে ফেলে চলে যেতে পারল!’’
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার দেহ উদ্ধার হওয়ার পরে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না-তদন্ত হয়। বুধবার সকালে পিন্টুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নেটমাধ্যমে ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়ে মানসিক চাপে ভুগছিলেন পিন্টু। প্রাথমিক ভাবে আমরা এ সংক্রান্ত অনেক তথ্যই হাতে পেয়েছি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানায়, তার মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তা থেকে আরও তথ্য খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে।