ভোট দিয়ে বেরনোর পরে আব্বাস। ছবি: তাপস ঘোষ।
রাজনৈতিক জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় নেমেছেন তিনি। মঙ্গলবার জীবনে প্রথমবার ভোটও দিলেন আইএসএফ প্রধান পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী।
প্রথম দুই পর্বের ভোটে তাঁর দলের প্রার্থী ছিলেন তিন জন। মঙ্গলবার, তৃতীয় পর্বে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আটে। তার মধ্যে রয়েছে নিজের ‘ঘর’ জাঙ্গিপাড়াও। ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস অবশ্য বলছেন, ‘‘ভোটের ফল নয়, মানুষ যাতে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, সেই পরিবেশ তৈরি করাই আসল।’’ সেই আবহ এই ভোটে অনেকাংশেই তৈরি হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন।
সোমবার দলীয় কর্মসূচি সেরে রাতে তাঁর বাড়ি ফিরতে দেরি হয়েছিল। এ দিন ভোরে নমাজ পড়ার পরে ফের কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম নেন। বাড়ি থেকে বের হন পৌনে ১১টা নাগাদ। ততক্ষণে আইএসএফ প্রার্থী যেখানে রয়েছেন, সেখানকার নানা তথ্য কাগজবন্দি হয়ে তাঁর পকেটস্থ। বাড়ি থেকে বেরিয়েই কালো গাড়িতে পাশের ফুরফুরা হাইমাদ্রাসায় গিয়ে ভোট দেন সাদা পোশাক আর ফেজ টুপিতে শোভিত বঙ্গের নয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মুখে সাদা মাস্ক। ফুরফুরা জাঙ্গিপাড়া বিধানসভার অন্তর্গত। এখানে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী শেখ মইনুদ্দিন ওরফে বুদো। প্রতীক খাম চিহ্ন। আব্বাস জানান, জীবনে প্রথম ভোট দিয়ে তিনি তৃপ্ত। বলেন, ‘‘খাম চিহ্নে ভোট দিলাম। এই যে খোলাখুলি বলতে পারছি কাকে ভোট দিলাম, এটাই গণতন্ত্র।’’
এত দিন ভোট দেননি কেন?
উত্তরে আব্বাস প্রথমে বলেন, ‘‘আমার দেশ বা আইন ব্যবস্থা জিজ্ঞাসা করলে অবশ্যই এর জবাব দেব। অন্য কাউকে জবাব দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আমার নেই।’’ পরে যোগ করেন, ‘‘পঞ্চায়েতে ভোট দেওয়ার জন্য বেরিয়ে শোনা গিয়েছে, ভোট পড়ে গিয়েছে। যেখানে ভোটই হত না, সেখানে কী করে এবং কেনই বা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ভোট দিতে যাব?’’ তাঁর বক্তব্য, এ বার শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সুন্দর ব্যবস্থা করেছে।
ভোট দিয়ে বেরিয়ে পরিচিত দু’-এক জনের সঙ্গে কথা বলেন আব্বাস। জিজ্ঞাসা করেন, ভোট দিয়েছেন কিনা। আশপাশের জায়গা এবং জাঙ্গিপাড়ায় ঘুরে আসেন। পরে হাওড়ার সাঁকরাইল এবং কলকাতার মেটিয়াবুরুজে নির্বাচনী কর্মসূচিতে যোগ দিতে যান। আব্বাসের অভিযোগ, জাঙ্গিপাড়ায় বিশেষ সমস্যা না হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরিপাল এবং খানাকুলে তৃণমূলের লোকেরা আইএসএফ ভোটারদের বাধা দেন। ক্যানিং পূর্বে কিছু জায়গায় তাঁদের এজেন্ট বসতে দেওয়া হয়নি। সেখানে বাড়ি বাড়ি হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মগরাহাট পশ্চিমে বিরোধী এক প্রার্থী নিজেই ‘মস্তানি’ করছেন বলে তাঁর অভিযোগ।
আব্বাসকে বলা হয়, রাস্তাঘাটে যে ভাবে তৃণমূল এবং বিজেপির পতাকা-পোস্টার-ফেস্টুন-ফ্লেক্স চোখে পড়ছে, সেই তুলনায় তাঁর দল অনেক পিছনে। পোড়খাওয়া রাজনীতিকের মতোই দলীয় সমর্থকদের কাছে ‘ভাইজান’ হিসেবে পরিচিত আব্বাসের জবাব, ‘‘আমরা আছি মানুষের মনে।’’