ভাঙড়ে সংযুক্ত মোর্চার জনসভায় আব্বাস সিদ্দিকী ও বিমান বসু। রবিবার। ছবি: সামসুল হুদা
আরাবুলের জন্য ‘সহানুভূতি’ দেখিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ভাঙনকে উসকে দিতে চাইলেন আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকী!
রবিবার ভাঙড়ে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকীর সমর্থনে সভা ছিল। সেখানে আরাবুলের নাম না করে আব্বাস বলেন, ‘‘একটি ছেলে লড়াই করে ভাঙড়ে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করেছিল। দলের জন্য সে জেল খেটেছে। দল এখন তাকে ধোঁকা দিল। এই তৃণমূল আপনাদের ভোটে জিতে যে ধোঁকা দেবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? সে তো নিজের ঘরের ছেলেকেই ধোঁকা দিতে পারে।’’
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ভাঙড় আসনে টিকিট না পেয়ে দলবল নিয়ে বিক্ষোভে নেমে পড়েন ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ইসলাম। পথঘাট অবরুদ্ধ করে, আগুন জ্বালিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। সাংবাদিক সম্মেলনে কেঁদেও ফেলেন আরাবুল। দলের একটি সূত্র জানায়, আরাবুলকে কলকাতায় ডেকে কথা বলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সতর্ক’ করে দেওয়া হয় তাঁকে। তারপরেই সুর নরম করে প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামেন আরাবুল।
তবে আরাবুলের দেহের ভাষা অন্য কথাই বলছিল। তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমেও তাঁকে পাশে বসিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি। আরাবুলের সেই চাপা অসন্তোষে ঘি ঢেলে আব্বাস এ দিন রাজনৈতিক ভাবে শাসক দলের অন্দরে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করলেন বলেই মনে করছেন অনেকে।
আরাবুল পরে নিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘কেউ কারও প্রশংসা করতেই পারেন। কারও সম্পর্কে মতামত পোষণ করতে পারেন। আমি দলের বিশ্বস্ত সৈনিক। দলের সঙ্গেই আছি। দলের অনুশাসন মেনে সমস্ত কর্মসূচি পালন করেছি। দলীয় কর্মীকে জেতাতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’
এ দিন ভাঙড়ের মেলার মাঠে ওই সভায় আব্বাস, প্রার্থী নওশাদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ। পুলিশের উদ্দেশে আব্বাসের হুঁশিয়ারি, ‘‘কারও কথায় প্রভাবিত হয়ে আমাদের ছেলেদের হয়রান করবেন না। আমরা আপনাদের সম্মান জানিয়ে বলছি, নিজেদের উর্দির দায়িত্ব পালন করুন। যদি আপনারা কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমাদের ছেলেদের হয়রান করেন, তা হলে আমরা থানা ঘেরাও করে গোটা এলাকা স্তব্ধ করে দেব।’’ প্রবীণ সিপিএম নেতা বিমান বসু এ দিন সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘ঢপবাজি’ করার অভিযোগ তুলে বিতর্ক তৈরি করেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢপবাজি করছেন। নন্দীগ্রামে তিনি আহত হয়ে বললেন, চক্রান্ত করা হয়েছে। পরে পাল্টি খেলেন। মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী অনর্গল মিথ্যা কথা বলছেন।’’
নওশাদও তীব্র ভাষায় এ দিন আক্রমণ করেছেন তৃণমূল-বিজেপিকে। তিনি বলেন, ‘‘কেউ যদি ভোটের আগে ভয় দেখাতে আসে, তা হলে বেঁধে রাখবেন। ভোটের পরে ছেড়ে দেবেন।’’