গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
ভোটদাতাদের শতকরা হিসেবে গরমিলের অভিযোগ আনল তৃণমূল। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে মাত্র ৫ মিনিটে ভোটদানের পরিসংখ্যান কমে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তারা। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে কারণ জানতে চেয়ে তৃণমূলের মন্তব্য, ভোটদানের পরিসংখ্যানে এমন গরমিল কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে।
শনিবার এই বিষয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে ই-মেল পাঠিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। লিখেছেন, কমিশন যেন অবিলম্বে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করে এবং বাংলায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করে।
শনিবার প্রথম দফায় ভোট ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের ৭টি কেন্দ্রে। ভোট শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডলে প্রথমে বিষয়টি সামনে আসে। নির্বাচন কমিশনকে ট্যাগ করে একটি টুইটে তৃণমূল লেখে, ‘হচ্ছেটা কী? ৫ মিনিটে ভোটদানের শতকরা হিসেব কমে অর্ধেক হয়ে গেল কী ভাবে? নির্বাচন কমিশন কি এর ব্যখ্যা দেবে? অবাক কাণ্ড!’ ওই টুইটে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচক আধিকারিককেও ট্যাগ করে তৃণমূল। লেখে, ‘দয়া করে বিষয়টি দেখুন’।
ভোটদাতাদের শতকরা হিসেব জানতে ‘ভোটার টার্নআউট অ্যাপ’ বানিয়েছে কমিশন। সেই অ্যাপ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তৃণমূলের এই অভিযোগ। টুইটে নিজেদের বক্তব্যের প্রমাণ হিসেবে অ্যাপের ২টি স্ক্রিনশটও জুড়ে দেয় তারা। সকাল ৯টা ১৩ এবং ৯টা ১৭ মিনিটে তোলা ওই স্ক্রিনশটে স্পষ্ট কাঁথির ২ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটদাতাদের শতকরা হার কমে অর্ধেক হয়ে যাওয়ার তথ্য। যদিও ওই স্ক্রিনশটের সত্যতা যাচাই করে দেখেনি আনন্দবাজার ডিজিটাল।
দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে ই-মেলেও যোগাযোগ করে তৃণমূল। তাতে তারা লিখেছে, কাঁথি দক্ষিণ (২১৬) এবং কাঁথি উত্তর (২১৩) বিধানসভা কেন্দ্রে শনিবার সকাল ৯টা ১৩ মিনিটে মোট ভোটদানের শতকরা হার ছিল যথাক্রমে ১৮.৪৭ শতাংশ এবং ১৮.৯৫ শতাংশ। ঠিক ৪ মিনিট পর এই শতকরার হিসেব কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। সকাল ৯টা বেজে ১৭ মিনিটে ওই ২ কেন্দ্রে ভোটদানের শতকরা হার কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১০.৬০ শতাংশ এবং ৯.৪০ শতাংশে।নির্বাচন কমিশনের অ্যাপ থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট ২টিও পাঠানো হয়েছে কমিশনকে। তৃণমূল কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছে, পরিসংখ্যানের তত্ত্বে এই গরমিলের কারণ কী? মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে লেখা ওই ই-মেল-এ ডেরেক লিখেছেন, ‘ভোটদানের শতকরা হিসেবে এমন গরমিল নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে।’ কমিশনারকে এই ধরনের অসামঞ্জস্যের ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখার অনুরোধ করে ডেরেক লেখেন, ‘বাংলায় নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করুক কমিশন’।