কোথাও লঙ্ঘন, কোথাও পালন।

কিছু ঢাকা, কিছু খোলা, কোথাও এখনও লুকোচুরি

ব্রাউন পেপারের মলাটে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখচ্ছবি। দিনের বেলা দিব্যি ছিল। কিন্তু সন্ধ্যার মুখে গ্লোসাইন বোর্ডে আলো জ্বলে উঠতেই মলাট ফুঁড়ে বেরিয়ে এল তাঁর উদ্ভাসিত মুখ। দক্ষিণ কলকাতায় এনএসসি বসু রোডের এক যাত্রী ছাউনিতে বৃহস্পতিবার এমনটাই নজরে এল।মঙ্গলবার কলকাতায় এসে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি জায়গা থেকে ভোটের প্রচারমূলক যাবতীয় হোর্ডিং-ব্যানার-ফেস্টুন সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী। ওই রাতেই তৎপরতা শুরু হয় পুর-প্রশাসনের তরফে। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরোলেও নির্দেশ মান্য করায় ফাঁক থেকে গিয়েছে বহু জায়গায়। বড় রাস্তা থেকে গলির ভিতরে ঢুকলেই চোখে পড়েছে বিধায়ক-মন্ত্রী, নেতা-নেত্রীদের সরকারি প্রচার হোর্ডিং।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৬ ০১:১১
Share:

সময়সীমা শেষ। তবু হাত পড়েনি বেলুড়ের এই হোর্ডিংয়ে।

ব্রাউন পেপারের মলাটে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখচ্ছবি। দিনের বেলা দিব্যি ছিল। কিন্তু সন্ধ্যার মুখে গ্লোসাইন বোর্ডে আলো জ্বলে উঠতেই মলাট ফুঁড়ে বেরিয়ে এল তাঁর উদ্ভাসিত মুখ। দক্ষিণ কলকাতায় এনএসসি বসু রোডের এক যাত্রী ছাউনিতে বৃহস্পতিবার এমনটাই নজরে এল।মঙ্গলবার কলকাতায় এসে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি জায়গা থেকে ভোটের প্রচারমূলক যাবতীয় হোর্ডিং-ব্যানার-ফেস্টুন সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী। ওই রাতেই তৎপরতা শুরু হয় পুর-প্রশাসনের তরফে। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরোলেও নির্দেশ মান্য করায় ফাঁক থেকে গিয়েছে বহু জায়গায়। বড় রাস্তা থেকে গলির ভিতরে ঢুকলেই চোখে পড়েছে বিধায়ক-মন্ত্রী, নেতা-নেত্রীদের সরকারি প্রচার হোর্ডিং। কোথাও কোথাও ফুটপাথে আলোকস্তম্ভে ঝুলতে দেখা গিয়েছে নির্বাচনী ফেস্টুন।

Advertisement

রানিকুঠিতে হোর্ডিং ঢাকা হলেও পিছনের আলোয় তা দৃশ্যমান।

উত্তর কলকাতার বড়বাজার, বেলেঘাটা, দক্ষিণে যাদবপুর, টালিগঞ্জ এবং খিদিরপুর এলাকায় বেশ কিছু জায়গায় নির্বাচনী প্রচারের জন্য এখনও হোর্ডিং, ফেস্টুন, ব্যানার রয়েই গিয়েছে। পুরসভার একাধিক অফিসার তা স্বীকারও করেছেন। যদিও তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা খুলে দিয়ে আসছি। পরে গিয়ে দেখা যাচ্ছে ফের ওগুলো ঝোলানো হয়েছে। কোথাও বা ছবির উপরে সাঁটা কাগজ খুলে ফেলা হচ্ছে।’’ এ রকম লুকোচুরি চললে তাঁদের কিছু করার নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন ওই আধিকারিকেরা। পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যে সব এলাকায় প্রচার সামগ্রী সরানো হয়ে গিয়েছে, সেই এলাকাগুলিতে ফের যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুর-কমিশনার।’’ এখন যা দেখা যাচ্ছে, তাতে ভোট পর্যন্ত ওই কাজ চালিয়ে যেতে হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। এক দিকে কমিশনের চাপ, অন্য দিকে স্থানীয় নেতা-নেত্রীদের নজর পড়ায় তাঁরা রীতিমতো বিড়ম্বনায়।

Advertisement

পুর প্রশাসনের সাফাই, গত ৪৮ ঘণ্টায় হোর্ডিং, ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার প্রচার সামগ্রী সরিয়ে দিয়েছে তারা। কোথাও ছবির উপর কাগজ সাঁটা, কালি লেপা, কোথাও বা ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে পোস্টার। সবটাই করা হয়েছে নির্বাচন দফতরের অফিসারদের নির্দেশেই। যদিও শহরের চিত্র সে কথা বলছে না।

বিধি মেনে হোর্ডিং ঢাকা হয়েছে ভিআইপি রোডে।

হোর্ডিং, ব্যানার, ফেস্টুন সরানোর দায়িত্বে যাঁরা, তাঁদের কাজেও গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করছেন শাসক দলের নেতাদের কেউ কেউ। তাঁরা অনেকেই এর মধ্যে চক্রান্তের গন্ধও পাচ্ছেন। দক্ষিণ শহরতলির এক তৃণমূল কাউন্সিলরের প্রশ্ন, ‘‘পুরসভার লোকেরা ঠিকমতো কাজ করছেন না। আর তার দায় চাপছে আমাদের দলের প্রার্থীর ঘাড়ে।’’ রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর ছবি ঢাকতে কেন স্বচ্ছ কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ওই কাউন্সিলর। তাঁর মন্তব্য, যে উদ্দেশ্যে হোর্ডিং-ব্যানার সরাতে পথে নেমেছে পুরসভা, পুলিশ ও নির্বাচন দফতরের কর্মীরা, কিছু ক্ষেত্রে তা পণ্ডশ্রম হচ্ছে।

শুধু কলকাতা পুর-এলাকাই নয়, লাগোয়া হাওড়া, সল্টলেক, লেকটাউন অঞ্চলেও এ দিন ছবিটা ছিল প্রায় একই। সরকারের বেশির ভাগ হোর্ডিংই ঢেকে ফেলা হয়েছে। তবে মূল রাস্তা থেকে একটু ভিতরে ঢুকলে এখনও চোখে পড়ছে নেতানেত্রীদের ছবি সাঁটা হোর্ডিং।

বৃহস্পতিবার ছবিগুলি তুলেছেন দীপঙ্কর মজুমদার, দেশকল্যাণ চৌধুরী এবং শৌভিক দে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement