ভোটের তাপ

সকালের দিকে ঠাসা ভিড়। কিন্তু রোদ চড়তেই খাঁখাঁ। ওন্দার বেশিরভাগ বুথেই সারা দুপুর কার্যত মাছি তাড়িয়েছেন ভোট কর্মীরা। সাহেবগঞ্জ এলাকার নরোত্তমপুর প্রাথমিক স্কুলের বুথে দুপুর ১২টার মধ্যেই প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে গিয়েছিল।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ০১:১৯
Share:

শান্তিনিকেতন

Advertisement

ওন্দা

সকালের দিকে ঠাসা ভিড়। কিন্তু রোদ চড়তেই খাঁখাঁ। ওন্দার বেশিরভাগ বুথেই সারা দুপুর কার্যত মাছি তাড়িয়েছেন ভোট কর্মীরা। সাহেবগঞ্জ এলাকার নরোত্তমপুর প্রাথমিক স্কুলের বুথে দুপুর ১২টার মধ্যেই প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে গিয়েছিল। আমগাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিতে দিতে এক ভোট কর্মী বললেন, ‘‘এখানে অনেক গাছ। যেন শান্তিনিকেতন। গরমটাও তাই একটু কম লাগছে।’’

Advertisement

জল দাও

গঙ্গাজলঘাটি

বেলা সাড়ে এগারোটা। ঠাঠা রোদ। ভোট দিতে যাওয়ার আগে দুর্লভপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের বটতলায় জমিয়ে বসেছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। দলের কর্মীদের সঙ্গে চুটিয়ে চলছে আড্ডা। এ দিকে গলা শুকিয়ে কাঠ। বললেন, ‘‘একটু ঠাণ্ডা জল যদি পাওয়া যেত!’’ মুখের কথা খসতে না খসতেই জলের বোতল হাজির। কিন্তু কর্মীদের হাত ঘুরে ঘুরে সাংসদের হাতে যখন সেই বোতল পৌঁছল, তাতে জলের তলানিটুকু পড়ে রয়েছে। সেটুকু দিয়েই গলা ভিজিয়ে বুথমুখো হলেন সৌমিত্রবাবু।

থোড়াই কেয়ার

বাঁকুড়া

এপ্রিলেই তাপমাত্রার পারদ ছাড়িয়ে গিয়েছে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস! সোমবার বাঁকুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৫.২ ডিগ্রি। হাওয়া অফিসের কর্তারা মনে করতে পারছিলেন না, শেষ কবে এপ্রিলে তাপমাত্রা এতটা উঠেছিল। এই ভরা গরমেই এ দিন বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ভোটে গেলেন। কেউ মাথা কাপড়ে মুড়ে, কেউ বা ছাতার ছায়ায়। কিন্তু গরম তীব্র হলেও ঐতিহ্য রেখেই বাঁকুড়ায় ভোট পড়ল ৮০ শতাংশেরও বেশি।

সকাল-সকাল

বাঁকুড়া

তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে বাঁকুড়ার ন’টি বিধানসভা কেন্দ্রেই সকাল সকাল ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লেন ভোটাররা। সকাল ১০টার মধ্যে বহু কেন্দ্রেই ৪০ শতাংশের উপর ভোট পড়ে গিয়েছিল। বাঁকুড়া শহরের বন দফতরের ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা কলেজ ছাত্রী সুমিতা দে, পুজা নন্দী, রিয়া দে-রা বলেন, “বেলা গড়ালেই রোদে শরীর যেন পুড়ে যাচ্ছে। তাই সকাল সকাল ভোট দান পর্ব সেরে ফেললাম।”

আজব গ্রাম

ওন্দা

বুথের সামনে সারাক্ষণ জটলা লেগেই রয়েছে। দুপুর রোদেও খামতি নেই। পুনিশোল হাইস্কুল বুথের সামনের সেই জটলা সরাতে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যাচ্ছিলেন জওয়ানরা। কিন্তু কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই ফের একই দশা। হয়রান হয়ে এক জওয়ান হিন্দিতে বললেন, ‘‘এই গরমেও ছুটিয়ে মারছে। আজব গ্রাম বটে একটা!’’

জল মেপে

গঙ্গাজলঘাটি

সিপিএমের মেজিয়া জোনাল কমিটি কাযার্লয়। টিভিতে খবরের চ্যানেল খোলা রয়েছে। পাশে বালতির মধ্যে রাখা জলের বোতল। ভোটের উত্তেজনার পারদ যত চড়ছে, দ্রুত খালি হয়ে যাচ্ছে একের পর এক জলের বোতল। ব্যাপারটা চোখে পড়তেই এক নেতার সতর্কবানী, ‘‘এই জলেই বিকেল অবধি চালাতে হবে কিন্তু। ভোট শেষ হওয়ার আগে জল শেষ হয়ে গেলে চলবে না।’’

কাহিল জওয়ান

গঙ্গাজলঘাটি

উপরে গনগনে সূর্য। গঙ্গাজলঘাটির বড়বাইদ প্রাথমিক স্কুলের বুথে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জওয়ানরাও গরমে কাহিল। এক ভোটারের চুটকি,‘‘শান্তিতে ভোট করাতে এসে গরমে ওঁরাই অশান্তি ভোগ করছেন।’’

বেনিয়মের অভিযোগ

কোতুলপুর

ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বেনিয়মের অভিযোগ তুললেন জোট প্রার্থী। কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের জোট প্রার্থী কংগ্রেসের অক্ষয় সাঁতরার অভিযোগ, মুরলীগঞ্জ হন্নেশুলি উচ্চ বিদ্যালয়ের বুথে ইভিএম মেশিনের সামনের জানালা খোলা রেখে ভোট চলেছে। বিষয়টি নিয়ে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানোর পরে জানালা বন্ধ হয়। অক্ষয়বাবুর আরও অভিযোগ, ১৮৯ উপর জগন্নাথপুর বুথে তাঁদের পোলিং এজেন্টকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা।

ফের ভোটের দাবি বিষ্ণুপুরে

বিষ্ণুপুর

সোমবার এক তরফা ভোট হওয়ার অভিযোগ তুলে চারটি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বি়ষ্ণুপুরের কংগ্রেস প্রার্থী তুষারকান্তি ভট্টাচার্য। তবে বিষ্ণুপুরের রিটার্নিং অফিসার তথা মহকুমা শাসক পার্থ আচার্য বলেন, ‘‘পুনর্নির্বাচনের দাবির কথা আমার এখনও জানা নেই।’’

পাম্প চুরি

দুবরাজপুর

মাঠ ভর্তি বোরো ধান। সেচের জল না পেলে শুকিয়ে যাবে। ঠিক এই সময়েই এক চাষির জমিতে থাকা সাব-মার্সিবল পাম্প চুরি হয়ে গেল। রবিবার গভীর রাতে দুবরাজপুর থানা এলাকার পদুমা অঞ্চলের নওয়াডাঙাল গ্রামের ঘটনা। বিষয়টি নজরে আসে সোমবার ভোরেই। চাষির নাম গণপতি গড়াই। দুবরাজপুর থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে ওই চাষি জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বিধা জমিতে খরার ধান লাগিয়েছিলেন ওই সাব-মার্সিবল পাম্পের ভরসাতেই। সেটা না থাকলে অত্যন্ত ক্ষতি হয়ে যাবে ফসলের। সব চেয়ে আশ্চর্যের ওই এলাকায় একাধিক সাব-মার্সিবল পাম্প থাকলেও শুধু মাত্র চুরি হয়েছে আদতে সিপিএম কর্মী গণপতিবাবুরই। সিপিএম সমর্থক হওয়ায় ওই চাষিকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতেই এই চুরি কিনা প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ফের কু-কথা

পাড়ুই

বেফাঁস মন্তব্য করে বারে বারে বিতর্কে জড়িয়েছেন। বারে বারে ‘শো কজ’ হয়েছেন, আবার ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু নাম যখন অনুব্রত, মুখে লাগাম আর কোথায়! বিরোধী সিপিএম ও বিজেপিকে ফের সেই কু-কথাই বললেন তিনি। তাঁর বেফাঁস মন্তব্যে কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছে বিরোধী বিজেপি ও সিপিএম। ঘটনাটি সোমবার বিকেলে বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পাড়ুই থানার সাত্তোর এলাকার। এ দিন ওই কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী চন্দ্রনাথ সিংহের সমর্থনে সাত্তোর মাঠে ছিল তৃণমূলের প্রচার ও জনসভা। স্থানীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি দলীয় নেতৃত্ব হাজির ছিলেন সভায়। বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী তপন হোড় বলেন, “যেমন দল, সে রকমই তাদের দলের নেতারা। এমনটাই প্রত্যাশিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement