প্রতীকী ছবি।
সব ঠিকঠাক থাকলে, আজ, সোমবার বিকেলে অথবা আগামীকাল রাজ্যের ২৯৪টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে তৃণমূল। এমনটাই খবর দলের অন্দরে। নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করার দিনই তৃণমূলের প্রার্থীপদ ঘোষণা করাই দস্তুর বলে জানান তৃণমূলের এক নেতা। এ বার তা হয়নি। তবে বেশি দেরিও তৃণমূল নেতৃত্ব করতে চান না বলেই খবর। সারা রাজ্যের সঙ্গে ঘোষণা হবে জেলার ২২ আসনের প্রার্থীর নামও। আর সেই তালিকায় নিজের নিজের নাম শোনার জন্য দমবন্ধ অপেক্ষায় তৃণমূলের নেতারা।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ২২ আসনে প্রার্থী দিলেও চারটি আসন বাদ দিয়ে অধিকাংশ আসনই ছিল শাসকদল তৃণমূলের অধরা। যদিও রাজ্যে নতুন সরকার আসার বছর দুয়েকের মাথায় দলবদলুদের ভিড় বাড়ে তৃণমূলে। ফলে কংগ্রেসের পাশাপাশি বামেদেরও জেতা আসন হাতছাড়া হয়। কিন্তু দল ত্যাগ করলেও বিধায়ক পদ ত্যাগ করেননি কোনও নেতাই। তৃণমূলের টিকিটে সেই অর্থে এবারই তাঁদের প্রথম লড়াই। তবে একচেটিয়া দল বদল করে যাঁরা কংগ্রেস বা অন্যদল থেকে তৃণমূলে এসেছিলেন তাঁরা প্রতিমুহূর্তে গোষ্ঠীকোদলের সম্মুখীন হয়েছেন। বারবার প্রকাশ্য বিবাদেও মেতে উঠেছিলেন কেউ কেউ। তাঁদের অনেকেই অবশ্য নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হওয়ার কথাও শুনিয়ে রেখেছেন আড়ালে আবডালে। পদ না পেলে তারাও দলবল নিয়ে অন্য দলে নাম লেখাতে পারেন নির্বাচনের প্রাক্কালে। পাশাপাশি অন্যদলের হয়ে ভোটে কাজ করতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে একাংশ জেলা নেতার।
তবে তৃণমূলের জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দলের একনিষ্ঠ কর্মী, যিনি ব্যক্তি থেকে দলকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, যাঁর জনসংযোগের পাশাপাশি জনমানসে গ্রহণ যোগ্যতা আছে এমন ব্যক্তিতেই প্রার্থী হিসাবে গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভেবেছে দল। তবে সেক্ষেত্রে পিকে-র দলের সমীক্ষাকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। গুরুত্ব পাবেন নয়া কোর কমিটির নেতাদের মতামতও।
পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তি মতামত অবশ্যই সর্বাগ্রে গুরুত্ব পাবে বলে জানান এক জেলা নেতা। সেই সুবাদে উঠে আসছে বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম। যেমন ফরাক্কা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে পারভেজ আলম, বড়ঞা থেকে জেলা পরিষদের সহ সভাপতি বৈদ্যনাথ দাস, ভরতপুর থেকে দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় অথবা হুমায়ুন কবীর তেমনই বহরমপুরের ক্ষেত্রে নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের পাল্লা ভারি বলেই দাবি সূত্রের।
এ ছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় প্রার্থী পদের রদবদল হতে পারে যেমন, তেমন একাংশ জয়ী বিধায়কদের দ্বিতীয়বার লড়াই করবার সম্ভাবনাও উজ্বল। তবে প্রার্থী হতে চেয়ে একাধিক ব্যক্তি জেলা থেকে রাজ্যস্তরে যোগাযোগ করেছেন নিজেদের সূত্র মারফত।
সম্প্রতি জেলা সফরে এসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর সঙ্গে দেখা করবার সুযোগ পাননি জেলার কোনও দাদারা। এক জেলা নেতা বলেন, “দিদির সঙ্গে দেখা করবার ছাড়পত্র পেলে নেতা কর্মীরা সেখানেই প্রার্থী হতে চেয়ে হত্যে দিতেন। যা অস্বস্তির হত দিদির পক্ষে। তাই কৌশলেই জেলা নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।”
গোষ্ঠীকোন্দলের স্বীকার হয়েছিলেন দলের চেয়ারম্যান তথা সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহাও। তাঁর নামেও বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছিল কালীঘাটে। তাঁর প্রার্থী পদ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
এদিন অবশ্য তিনি বলেন, “ আমি প্রার্থীপদ পাওয়ার আশাতেই খেটে যাচ্ছি। প্রার্থী পদ পেলে ভাল লাগবে। শুনেছি আজকে অথবা কালকে সেই তালিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ঘোষণা করবেন তখনই সব স্পষ্ট হবে।”