মোবাইলের রমরমার যুগেও বেতারেই আস্থা পুলিশের। তাই ভোটের মুখে পুলিশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিবিড়তর করতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে ৭০০টি ওয়্যারলেস সেট।
গত বারের চেয়ে এ বার ভোটে বুথ বেড়েছে প্রায় ১৯ হাজার। এর মধ্যে রাজ্যে নতুন জেলা হয়েছে আলিপুরদুয়ার। তৈরি হয়েছে নতুন কিছু কমিশনারেট, নতুন নতুন থানা। এই সব কারণেই বাড়তি ওয়্যারলেস সেটের দরকার পড়েছে। সদ্য কেনা বেতার যন্ত্রের অধিকাংশই পাঠানো হয়েছে জঙ্গলমহলে। কারণ, প্রথম দফায় ৪ এবং ১১ এপ্রিল ভোট হবে সেখানে। জঙ্গলমহলে ভোট শেষে হয়ে গেলে বেতার যন্ত্রগুলো অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে নির্বাচনী সূচি মেনে।
মোবাইলের যুগে ওয়্যারলেস সেটের উপরে এত নির্ভরতা কেন?
অনেক পুলিশকর্তার বক্তব্য, মোবাইল যতই যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করুক, ওয়্যারলেস সেটের বিকল্প নেই। কারণ, বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে একসঙ্গে বাহিনীর বহু জনের কাছে বার্তা পাঠানো সম্ভব। যেটা মোবাইল করতে পারে না। তা ছাড়া বেতার যন্ত্রের কর্মপ্রক্রিয়া বেসরকারি সার্ভিস প্রোভাইডারের উপরে নির্ভরশীল নয়। কোনও কারণে নেটওয়ার্ক কাজ না-করলে মোবাইল ফোন অকেজো হয়ে পড়ে। তখন ওয়্যারলেসই ভরসা। আবার ভোটের সময়ে পুলিশকে এমন অনেক তল্লাটে যেতে হয়, যেখানে মোবাইলের টাওয়ারই নেই। অথচ নিজেদের মধ্যে সব সময় যোগাযোগ রাখা জরুরি। তাই সেখানে ওয়্যারলেস সেট ছাড়া পুলিশ কার্যত অসহায়।
পুলিশি সূত্রের খবর, নতুন ৭০০ ওয়্যারলেস সেটের মধ্যে ৪০০টি ওয়াকিটকি এবং ৩০০টি স্ট্যাটিক, যা এক জায়গায় বসানো থাকবে। স্ট্যাটিক সেটগুলো থানা, ফাঁড়ি ও পুলিশের গাড়িতে বসানো হচ্ছে। আর ওয়াকিটকিগুলো থাকবে পুলিশ অফিসার বা কর্মীদের হাতে।
নবান্নের এক পুলিশকর্তা জানান, রাজ্য পুলিশে এখন থানার সংখ্যা ৪৮৫। টহলদার ভ্যানের সংখ্যা প্রায় এক হাজারের কিছু বেশি। আগেকার বহু ওয়্যারলেস সেট বেশ পুরনো হয়ে গিয়েছে, কিছু প্রায় অকেজো। এই পরিস্থিতিতেই বেশ কিছু ওয়্যারলেস সেট কেনা জরুরি হয়ে পড়েছিল।
‘‘পুলিশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতেই নয়া অয়্যারলেস সেট কেনা হয়েছে,’’ বললেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (টেলিকম) অধীর শর্মা। তিনি জানান, জানুয়ারিতে গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে নতুন ৩৫০ ওয়্যারলেস সেট দেওয়ায় পুলিশের কাজের সুবিধে হয়েছে। সেই সেটগুলোও এ বার ভোটে ব্যবহার করবে পুলিশ।