রাহুলের সঙ্গে আলাপচারিতায় তাপস সিংহ (বাঁ দিকে)। তীব্র গরমেও জনজোয়ার (ডান দিকে)। ছবি: সোহম গুহ
তেরঙ্গা হাত আর লাল কাস্তে-হাতুড়ির কাটআউটে ছয়লাপ মুগবে়ড়িয়ার মাঠ। তারই ফাঁকে ফাঁকে দেখা গিয়েছে ইন্দিরার প্রিয়দর্শিনী হাসি, কোথাও সনিয়া গাঁধীর ব্যানার। সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই ভিড় জমতে জমতে প্রায় হাজার দশের মানুষ হাজির জোটের সভায়।
তীব্র গরম আর চড়া রোদ উপেক্ষা করে রাহুল গাঁধীর জন্য প্রায় ঘণ্টা চারেক অপেক্ষা করলেন বাম-কংগ্রেস সমর্থকরা। মাথার উপর কেউ ধরলেন ছাতা, কেউ বাঁধলেন তোয়ালে, কেউ টুপি। তবু মাঠ ছাড়েননি। মহিলা সমর্থকদের ভিড় ছিল দেখার মতো। গরম থেকে বাঁচতে ছোট্ট মেয়েকে কোলে নিয়েই তাঁরা দিব্যি ডুবেছেন আইসক্রিমে। চোখ কিন্তু ছিল গনগনে আকাশে। কখন ভেসে উঠবে সাদা কপ্টার।
ভগবানপুর আর ময়না বিধানসভার জোট প্রার্থীর সমর্থনে মুগবেড়িয়াতে সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা ১২টায়। কিন্তু তীব্র গরম আর অপেক্ষার শেষ নেই। রাহুল এলেন পৌনে ৩টেয়। সারাদিন ৩৮ ডিগ্রির আশপাশে ঘুরেছে তাপমাত্রার পারদ। চড়া রোদ। তাতেও ভাটা পড়েনি সমর্থকদের উৎসাহে। প্রায় হাজার পনেরো মানুষের জমায়েতে বক্তব্য রাখেন রাহুল। মঞ্চে উঠেই ক্ষমা চেয়ে নেন দেরির জন্য। রাহুলের সঙ্গেই কপ্টারে আসেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক সিপি জোশি, মানস ভুঁইয়া, অধীর চৌধুরী। মঞ্চে আগেই উপস্থিত ছিলেন রামনগরের সিপিএম প্রার্থী তাপস সিংহ, ভগবানপুর ও ময়না কেন্দ্রের দুই কংগ্রেস প্রার্থী হিমাংশুশেখর মহাপাত্র, মানিক ভুঁইয়া-সহ জেলা কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
কুড়ি মিনিটের বক্তব্যে, রাহুল একযোগ বিঁধেছেন তৃণমূল-বিজেপিকে। আক্রমণাত্মক রাহুল বলেন, ‘‘৭২ লক্ষ মানুষের কর্ম সংস্থানের কথা বলে রাজ্যের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারদায় সর্বস্বান্ত মানুষের টাকা উদ্ধারের কোন ব্যবস্থাও করেননি। তৃণমূল রাজত্বে এ রাজ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্পগঠন, কর্মসংস্থান সবকিছুতেই পিছিয়ে পড়েছে।’’ রাহুল দাবি করেন, নারী নির্যাতন আর ধর্ষণের ঘটনায় এ রাজ্যের স্থান এখন সারা দেশের মধ্যে শীর্ষে। অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “কালো টাকা উদ্ধার আর দেশের দু’কোটি মানুষের কর্মসংস্থানে আওয়াজ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২৩ মাসের পর এখন কালো টাকা উদ্ধারের বদলে ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি স্কিম’য়ের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার ফর্মুলা চালু করতে চাইছেন।”
প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্যে উঠে আসে এ দিনের ভিড়ের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “জনজোয়ার দেখা দিয়েছে। মানুষ এখন বদল চাইছেন। ১৯ মে-র পর বিরোধী জোটই ক্ষমতায় আসছে।”