বিষ্ণুপুরের রাসমঞ্চে সদলবল ভোটের সাধারণ পর্যবেক্ষক পি বেণুগোপাল। বৃহস্পতিবার। ছবি: শুভ্র মিত্র।
মুর্শিদাবাদ, বীরভূমের পরে বাঁকুড়া। নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষকদের পরে এ বার বিতর্কে বাঁকুড়ার রাইপুর বিধানসভার সাধারণ পর্যবেক্ষক পি বেণুগোপাল। জঙ্গলমহলের এই পর্যবেক্ষক বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুরে গিয়ে ছিন্নমস্তা মন্দিরে পুজো দেন। রাসমঞ্চ এবং কয়েকটি মন্দিরেও যান। কাজ ফেলে তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন —এই অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে সিপিএম।
ছিন্নমস্তা মন্দিরে এ দিন সকালে পুজো দিয়ে রাসমঞ্চ ঘুরে পর্যবেক্ষক যান বিষ্ণুপুর রাজাদের মৃন্ময়ী মন্দিরে। ঘুরে দেখেন কাছের রাধেশ্যাম মন্দিরও। সব মিলিয়ে প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের ব্যাপার।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রাইপুর কেন্দ্র কয়েক বছর আগেও মাওবাদীদের উপদ্রব ছিল। এখন এলাকার পরিস্থিতি বদলালেও এলাকাবাসীকে ভোটমুখী করা এবং সাহস দেওয়াই কমিশনের কাছে চ্যালেঞ্জ। এমন এক কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক দক্ষিণ বাঁকুড়ায় নিজের এলাকা ছেড়ে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের বিষ্ণুপুরে মন্দির দেখে সময় কাটালেন কেন, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোরঞ্জন পাত্রের অভিযোগ, ‘‘৪ এপ্রিল রাইপুরে ভোট। অথচ সেখানকার পর্যবেক্ষককে বিষ্ণুপুরে ঘুরে বেড়াতে দেখলাম! এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’ বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষও বলেন, ‘‘ভোট মিটলেও উনি এখানে বেড়াতে পারতেন। এটা কেমন ধারা কাজের নমুনা!’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘যে সব কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসেছেন, তাঁদের গতিবিধি সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। তাঁদের অনেককে কেনাকাটা করতে বা বেড়াতে দেখা যাচ্ছে! মানুষকে বলব, বিষয়টা নজরে রাখুন। কমিশনকেও দেখতে বলব।’’
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে শাড়ি কেনাকাটা করা বা বীরভূমের ইলামবাজারের আমখই গ্রামের ফসিল-পার্কে বিশেষ পর্যবেক্ষকদের যাওয়া নিয়ে বিরোধীরা হইচই শুরু করেন। তার পরেই দিল্লি থেকে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, যে কাজে তাঁদের পাঠানো হয়েছে তাতেই মন দিতে হবে পর্যবেক্ষকদের। তার পরেও এ দিনের সফর কেন? পি বেণুগোপালের বক্তব্য, ‘‘হোলি ছিল বলে বিষ্ণুপুরে মন্দির-দর্শনে গিয়েছিলাম।’’
হোলি থাকলেও জেলা প্রশাসনের নির্বাচনের কাজে যুক্ত আধিকারিক-কর্মীরা তো এ দিন কাজ করেছেন? এ বার বেণুগোপালের জবাব, ‘‘একই জেলার মধ্যেই তো গিয়েছি।’’ জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি।