West Bengal Assembly Election 2021

Narendra Modi’s Brigade Rally:  বক্তৃতা দূর অস্ত, মোদীর ব্রিগেড সমাবেশে ফুলদানি হয়েই রয়ে গেলেন টলি তারকারা

মোদীর মঞ্চের পাশের একটি মঞ্চে তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল। মঞ্চসজ্জার ফুলদানির মতোই। যতদূর দেখা গিয়েছে, তাঁরা অবাক চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২১ ২০:১৮
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

ঘর সাজাতে ফুলদানি লাগে। আর মঞ্চ সাজাতে তারকা। যদি সেই তারকা মিঠুন চক্রবর্তী হন, তা হলে প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে তাঁর পাশে জায়গা পান। সুযোগ পান দুটো কথা বলার। না হলে স্রেফ ‘ফুলদানি’ হয়েই থেকে যান। যেমনটা রবি-ব্রিগেডে হয়ে রইলেন যশ দাশগুপ্ত, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, হিরণ চট্টোপাধ্যায়, রূপাঞ্জনা মিত্র, রুদ্রনীল ঘোষ, পায়েল সরকাররা। এঁরা সকলেই সম্প্রতি বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। অভিনেতা থেকে নেতা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। ব্রিগেড শুরু হওয়ার ঘণ্টা খানেক আগে ময়দানে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু ওইপর্যন্তই। তার পর আর তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। মোদীর মূল মঞ্চের পাশের একটি মঞ্চে তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল। মঞ্চসজ্জার ফুলদানির মতোই। যতদূর দেখা গিয়েছে, তাঁরা অবাক চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখেছেন। সভা শুরু আগে চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে কথাবার্তা বলেছিলেন বটে। কিন্তু ব্রিগেডে পৌঁছে মোদী-জলতরঙ্গে খড়কুটোর মতো ভেসে গিয়েছেন। কারণ, রবিবারের ব্রিগেডে তারকা ছিলেন একজনই— নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী।

Advertisement

তবে বিজেপি-তে পুরোন তারকারাও আছেন। রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়রাও তো তারকাই বটে। কিন্তু তাঁরা পুরোন। এবং পরীক্ষিত। এখন তাঁরা যতটা না অভিনেতা, তার চেয়ে অনেক বেশি নেতা। তাই রূপা সুযোগ না পেলেও লকেট এবং বাবুল বক্তৃতা করার সুযোগ পেয়েছেন। ছিলেন অঞ্জনা বসুও। তবে তাঁকে মূল মঞ্চের ধারেপাশে দেখা যায়নি। নতুনদের জায়গা হল মঞ্চের পাশে তাঁদেরই জন্য বাঁধা মাপে ছোট মঞ্চে।

ব্রিগেডে আসার আগে বাড়ি থেকে বেরোনর সময় অভিনেতা যশ বলেছিলেন, এটিই তাঁর প্রথম ব্রিগেডযাত্রা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি খুবই উত্তেজিত। যে পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, সেই পরিবর্তনের সাথে আমিও আছি এই জন্য আমি খুশি। যেভাবে মানুষ ব্রিগেডের দিকে ঝুঁকছে তাতে আমার মনে হয় মানুষ ঠিক করে নিয়েছে, কে তাঁদের ভালটা করতে পারে। আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত বিজেপি ক্ষমতায় আসছে। আমি প্রার্থী হব কি না সেটা যখন তালিকা বেরোবে তখন জানা যাবে। তবে দল যা করবে তার সঙ্গে আমি একমত।’’ হিরণের জীবনেরও এটি প্রথম ব্রিগেড। তাঁর কথায়, ‘‘এর আগে বহু বছর ধরে আমি একুশে জুলাই করেছি। ব্রিগেড কখনও করিনি। এটা আমার প্রথম ব্রিগেড এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একসঙ্গে থাকা। লক্ষ লক্ষ মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা। এর জন্য একটা সৌভাগ্য দরকার। মনে হচ্ছে আমি খুবই সৌভাগ্যবান।’’ ঘটনাচক্রে, হিরণ এর আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব যুব তৃণমূলের পদে ছিলেন। ফলে তিনি রাজনীতিকের মতোই বলেছেন, ‘‘আমাকে প্রার্থী করা হোক বা না করা হোক, আমার কোনও পরিবর্তন হবে না। আমি এসেছি নতুন বাংলা গড়তে। আত্মনির্ভর বাংলা গড়তে। পশ্চিমবঙ্গে গত ৪৪ বছর ধরে কোনও কর্মসংস্থান হয়নি। অমিত শাহের সঙ্গে যখন আমার শেষ দেখা হয়েছে, তখন আমি বলেছিলাম, একটাই কারণে বিজেপি-তে যাব— মানুষের কর্মসংস্থান করতে হবে। উনি বলেছিলেন, সেটাই ওঁদের প্রধান লক্ষ্য।’’

Advertisement

অভিনেত্রী শ্রাবন্তী আবার বলছিলেন, ব্রিগেডে আসার উত্তেজনায় শনিবার রাতে তাঁর ঘুমই হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘সকাল সকাল উঠে পড়েছি। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর সামনে যাব। তাঁর সঙ্গে দেখা হবে। খুবই উৎসাহিত আমি। নিশ্চয়ই চাইব ওঁর সঙ্গে কথা বলতে। সোনার বাংলায় আসার জন্য স্বাগত জানাব। তার থেকেও বেশি উত্তেজিত এই কারণে যে, প্রচুর মানুষ আসবেন। যাঁরা বিজেপি-কে সমর্থন করেন।’’ তাঁর আশা, বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হবেন। তবে পুরোটাই ছেড়ে দিয়েছেন ভগবান এবং তাঁর দলের উপর। রিমঝিম মিত্রের যেমন এটি দ্বিতীয় ব্রিগেড অভিযান। তাঁর কথায়, ‘‘দিনটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। প্রার্থী হব কি না এখনও জানি না। তবে আশা করছি না বললে ভুল হবে। প্রার্থী হলে অবশ্যই ভাল লাগবে। যদি না-ও হই, আমরা প্রত্যেকে চাই দল ক্ষমতায় আসুক। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সত্যিকারের উন্নয়ন হোক। দল যদি যোগ্য মনে করে, নিশ্চয়ই টিকিট দেবে। আর যদি মনে করে আরও আমার কাজ শেখা দরকার, তাহলে পরের নির্বাচনে টিকিট দেবে।’’ সদ্যই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন পায়েল সরকার। তাঁর অভিমত ছিল, ব্রিগেড বাংলার মানুষের জন্য ‘ঐতিহাসিক’ সমাবেশ। পায়েলের কথায়, ‘‘বাংলার মানুষের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন। এর আগেও ব্রিগেডে গিয়েছি। তবে কোনও দলের হয়ে নয়। দিদি (মমতা বন্দ্যওপাধ্যায়) বলেছিলেন বলে গিয়েছিলাম। কারণ, দিদিকে আমি সম্মান করি।’’ রুদ্রনীলের কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে আসল পরিবর্তন আনতে চাইছি। ভয় থেকে মানুষ বেরিয়ে আসছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement