বসিরহাটে বক্তব্য রাখছেন মোদী। ছবি: নির্মল বসু
ভরা জনসভায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়ে গেলেন এ রাজ্যের একমাত্র বিজেপি বিধায়ক তথা এ বারের বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যকে।
মাত্র সতেরো মাস কার্যকালের মধ্যেই শমীকবাবু দিল্লিতে তদ্বির করে মিষ্টি জলের প্রকল্প আদায় করে ছেড়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেই সঙ্গে জানান, কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ প্রকল্পের অর্ধেক টাকা কেন্দ্র বরাদ্দ করলেও বাকি টাকা দিচ্ছে না রাজ্য। কাজ হয়নি যে কারণে। যা প্রমাণ করে, এই জলপ্রকল্প রাজ্য সরকার চায় না, এমনটাই ব্যাখ্যা মোদীর।
বৃহস্পতিবার বসিরহাটের ভ্যাবলা হাইস্কুলের মাঠে সভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বসিরহাটে প্রস্তাবিত পলিটেকনিক কলেজ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পলিটেকনিক কলেজ হচ্ছে, আর দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কষ্ট হচ্ছে।’’
শমীকবাবুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ মোদী বলেন, ‘‘কুকর্ম যেমন একজন করলে গোটা দলের ঘাড়ে দায় এসে পড়ে, তেমনই একজন ভাল কাজের বিধায়ক থাকলে সেখানকার উন্নতি হতে বাধ্য। পশ্চিমবাংলার দুঃখ দুর করতে ভট্টাচার্যির (শমীক) মতো মানুষ দরকার। তা হলে বাকিরাও ভাল কাজ করতে শিখবে।’’ শমীকবাবু ইতিমধ্যেই সতেরো মাসে তাঁর কাজের খতিয়ান জানিয়ে পুস্তিকা প্রকাশ করেছেন। সে প্রসঙ্গেও শমীকের তারিফ করেন মোদী।
বনগাঁয় গৌতম দেবের জনসভা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
রাজ্য সরকারকে নানা বিষয়ে তুলোধোনা করার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্তবর্তী এই এলাকায় প্রচারে এসে মোদী এ দিন বলে গিয়েছেন, ‘‘জাল নোট আর বাংলাদেশি ঢুকে বাংলার তরুণ প্রজন্মকে কর্মহীন করেছে।’’
প্রচারে এ দিন মমতাও ছিলেন বিজেপির প্রতি আক্রমণাত্মক।
শ্যামনগরে প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্য, ‘‘ওঁকে শ্রদ্ধা করি না। এমন ভাবে কথা বলেন, যেন ভগবানের ছোট ছেলে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মন কি বাত বলছেন দূরদর্শনে।’’ ‘‘তোমার মনের কথা শুনতে হবে কেন?’’— কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন জেলা জুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জনসভা ছিল। বনগাঁয় ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সুশান্ত বাওয়ালির সমর্থনে সভা করেছেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব।
আমডাঙায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একে অন্যের প্রতি আক্রমণাত্মক থাকলেও গৌতমবাবু বলেন, ‘‘মমতার সঙ্গে বিজেপির সমঝোতা হয়েছে। মুকুলকে দিল্লি পাঠানো হয়েছে ডিল করার জন্য।’’
মতুয়াদের প্রসঙ্গ টেনে এ দিন মমতার সমালোচনা করেছেন গৌতমবাবু। বনগাঁর সভায় তিনি বলেন, ‘‘মমতা কী রকম বেইমান, নিজের মায়ের থেকে বড়মা (মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপানিদেবী) এখন ওর বড়মা হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এখন মমতা আর বড়মার নাম করে না। তৃণমূলের নেতারা বড়মার কাছে যান না। ওঁর কাছে দরকার মিটে গিয়েছে।’’ গৌতমবাবুর মতে, মমতা কোনও মানুষকে ভালবাসেন না। নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছু দেখেনও না। মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করার দরকার ছিল, সেটা মিটে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গেই তাঁর দাবি, মতুয়াদের তিনি নিউটাউনে জমি দিয়েছেন। এক কোটি টাকার সম্পত্তি আছে। সেখানে মতুয়া ফাউন্ডেশন তৈরি হয়েছে।
এ দিন হিঙ্গলগঞ্জে সিপিআই প্রার্থী আনন্দ মণ্ডলের সমর্থনে সভা করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও।