তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের রোড শোয়ে শ’খানেক মোটরবাইক নিয়ে সমর্থকেরা মিছিল করায় কমিশনে অভিযোগ করেছিল বাম ও কংগ্রেসে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই রবিবার ভোট গ্রহণের ঠিক আগের দিন সরিয়ে দেওয়া হল দুর্গাপুর থানার ওসি সুজিত মুখোপাধ্যায়কে। তাঁর জায়গায় থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেকেন্ড অফিসার অসীম মজুমদারকে।
এর আগে শাসক দলের হয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে কমিশন সরিয়ে দিয়েছিল মাওবাদী এলাকার ওএসডি ভারতী ঘোষ-সহ ৩৭ জন অফিসারকে। তবে বাইক বাহিনী নিয়ে কমিশন কড়া পদক্ষেপ করলেও আজ, সোমবার দ্বিতীয় দফার ৩১ আসনে ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ার আগে বহিরাগত নিয়ে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছে শাসক ও বিরোধী— দু’পক্ষই।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্তের সঙ্গে দেখা করে সবংয়ে কর্মী খুনের ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানালেন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়। তিনি বলেন, ‘‘হার নিশ্চিত জেনে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ষড়যন্ত্র করছে।’’ এর আগে মুকুল কমিশনে বলেছিলেন, আর এক জন তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর দেহ নিয়ে কমিশনে আসবেন তাঁরা। মুকুলকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলছে। তাকে ব্যাহত করতে চাই না।’’
মুকুলের অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা লাগোয়া সীমান্ত দিয়ে বহিরাগতরা রাজ্যে ঢুকছে। আজ সোমবার রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট মাথায় রেখে ওই সব সীমানা সিল করার আবেদন করেন মুকুল। সিপিএম নেতা মৃদুল দে অবশ্য কমিশনে এসে শাসক দলের বিরুদ্ধে পাল্টা বহিরাগত জড়ো করার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘নারায়ণগড়, কেশপুর, সবং-সহ বিভিন্ন জায়গায় বাইরের লোক ঢুকছে। অবিলম্বে কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে বলছি।’’ কংগ্রেস নেতা এবং সবংয়ের প্রার্থী মানস ভুঁইয়ারও অভিযোগ, ‘‘বহিরাগত শাসক দলই ঢোকাচ্ছে। আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। আমরা প্রশাসনকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’
মৃদুলবাবুর দাবি, এ পর্যন্ত ১৪৫টি বিধিভঙ্গের অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কমিশন ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে প্রার্থী হয়েও কী ভাবে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন? পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই বা কী করে নিজে প্রার্থী হয়ে দলীয় দফতরে স্কুলে গরমের ছুটি ঘোষণা করেন?’’
সিপিএমের পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিক ভাবে ব্যবহার না-করার অভিযোগও জানানো হয়েছে। মৃদুলবাবু বলেন, ‘‘কিছু বুথে ৯৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। যা অসম্ভব। আশা দ্বিতীয় দফার ভোটে কমিশন ব্যবস্থা নেবে।’’
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা অসীম সরকারও। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে নির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে যে ঝাড়খণ্ড থেকে বীরভূমের খয়রাশোল এবং আসানসোলে আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকছে। বিষয়টি কমিশনে জানিয়েছি।’’ অসীমবাবু জানান, সমস্ত জায়গায় তল্লাশি চালানোর আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচনী অফিসার।