বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলায় কাটমানির সরকার চলছে। তাই দুর্নীতিবাজ পিসি-ভাইপোকে হঠিয়ে বাংলাকে বাঁচানোর আহ্বান জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তাঁর দাবি, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কী খেলা খেলছেন, তা বাংলার মানুষ জানে। ফলে বাংলার মানুষই দিদিকে হঠাতে চায়। বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে রাজ্যে জনসভা করতে এসে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রবিবার এ ভাবেই আক্রমণ করলেন স্মৃতি।
রবিবার বাংলায় একের পর এক বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে পুরুলিয়া এবং মেদিনীপুরে জনসভা করেন কেন্দ্রীয় বস্ত্র এবং নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি।
রবিবার রাজ্য সফরে এসে প্রথমে পুরুলিয়ার মানবাজারে যান স্মৃতি। মানবাজার আসনের বিজেপি প্রার্থী গৌরী সিংহ সরকারের সমর্থনে ফকিরডাঙ্গা মাঠের সভাস্থলে একটি জনসভা করেন তিনি। সভায় নিজের ভাষণে শাসকদলের উদ্দেশে স্মৃতি বলেন, “এই মানবাজারে তোমাদের খেলা এ বার শেষ হবে। বাংলায় কাটমানির সরকার চলছে। বাংলার কৃষকরা সম্মান পাননি। এ রাজ্যের কৃষকেরা বঞ্চিত হয়েছেন। রাজ্য সরকার কিসান সম্মান নিধি চালু হতে দেয়নি।” কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল করে মমতা সরকার তা নিজের নামে চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “গরিবের জন্য কাজ করছেন মোদী, আর ছবি তুলছে দিদি। ২ টাকা কেজি দরে গরিব মানুষকে চাল দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী সরকার আর দিদি বলছে, আমি দিয়েছি। দারুণ খেলা করছে।”
পুরুলিয়ার পর রবিবার দুপুরে প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি থানা এলাকার গোদাপিয়াশালের মাঠে জনসভা করেন স্মৃতি। দুপুর ১টা নাগাদ মেদিনীপুরে এসে জনসভার পৌঁছন তিনি। ওই সভায় বেশির ভাগ সময়েই বাংলায় ভাষণ দেন স্মৃতি। শালবনির সভা থেকেই ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজীব কুণ্ডু এবং মেদিনীপুর কেন্দ্রের প্রার্থী শমিতকুমার দাসের সমর্থনে বাংলার মানুষের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন তিনি। পদ্মফুলে ভোট দিয়ে মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থীকে বিধানসভায় পাঠানোর আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন, “ন্যায় এবং বিকাশের জন্য বিজেপি-কে আশীর্বাদ করুন। বাংলায় এ বার বিজেপির সরকার হচ্ছে।” একই সঙ্গে মমতার সরকারের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, “দিদির খেলা বন্ধ হবে। দিদিকে হটাতে চায় বাংলার মানুষ। পিসি-ভাইপোকে হটাও, বাংলা বাঁচাও।” তৃণমূল নেত্রী ছাড়া অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নাম না করে আক্রমণ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “দিদি বলছে খেলা হবে, মানুষ বলছে খেলা শেষ। দিদি কী খেলা করছে, তা মানুষ জানে।”
শাসকদলের পাশাপাশি বাম এবং কংগ্রেসকেও আক্রমণের নিশানা করেছেন স্মৃতি। তিনি বলেন, “শুধু দিদি নয়, খেলা করছে বামেরাও। বাংলায় দোস্তি, কেরলে কুস্তি করছে। বামপন্থীরা বা কংগ্রেস, সকলেই খেলা করছে।”
সভার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্মৃতির দাবি, “বাংলা থেকে পিসি-ভাইপো যাচ্ছে, তা নিশ্চিত করেছে বাংলার মানুষ। বাংলায় খেলা শুরু করেছেন দিদি। মহিলাদের সম্মান নিয়ে খেলেছেন, মানুষের জীবন নিয়ে খেলেছেন। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে নিজের মতো করে নাম দিয়ে ছবি ব্যবহার করে প্রচার করছেন। খেলা শেষ, তা নিশ্চিত। কারণ, বাংলা আমরা নিজেরাই বাঁচাব।”