মুখে ‘বদলা’-র কথা বললেন না বটে। কিন্তু যা বোঝানোর বুঝিয়ে দিলেন শিশির অধিকারী। ছোট ছেলে সৌম্যেন্দুর গাড়ি ভাঙচুর প্রসঙ্গে শান্তিকুঞ্জের কর্তার ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে নিউটনের তৃতীয় সূত্র আউড়েছেন, ‘‘এভরি অ্যাকশন হ্যাজ আ ইকুয়াল অ্যান্ড অপোজিট রিঅ্যাকশন।’’ অর্থাৎ, প্রতিটি ক্রিয়ার একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। তার সঙ্গে জুড়েছেন, ‘‘এই যে কাচ ভেঙেছে যারা, তাদের হাতে লেগেছে কি না বলতে পারব না। লাগলে হাতে ইঞ্জেকশন নিতে হবে। তাদের হাতে লাগতেই পারে। যে লাঠি দিয়ে ভেঙেছে, তাতেও তো দু-চারটে কাচ লেগে থাকতে পারে। ডোজ তো ফাইন দেব। সব ভাল ডোজ আছে আমার কাছে। সব দিয়ে দেব ঠিক সময়ে।’’
মেজ ছেলে শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী। ছোট ছেলে সৌম্যেন্দু দক্ষিণ কাঁথি আসনের বিজেপি প্রার্থীর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট। শনিবার কাঁথিতে ভোটের দিনেই সেই ছোট ছেলের উপর হামলার অভিযোগ এসেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। চুরমার হয়ে গিয়েছে সামনের উইন্ডস্ক্রিন এবং পিছনের কাচ। সৌম্যন্দুর আঘাত না লাগলেও জখম হয়েছেন তাঁর গাড়ির চালক। তাতেই রেগে আগুন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ শিশির।
গত কয়েকদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সভায় বলছেন, তাঁকে এতদিন নন্দীগ্রাম-সহ পূর্ব মেদিনীপুরে ঢুকতে গেলে অনুমতি নিতে হত। সেই ব্যাপারে কোনও কথা না বললেও শনিবার তৃণমূল সম্পর্কে সমালোচনা করতে গিয়ে শুভেন্দুকে বঞ্চনা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন শিশির। তিনি বলেন, ‘‘একটা ছেলে যুবর প্রেসিডেন্ট ছিল। তাকে বসিয়ে রেখে এবং আমাদের বসিয়ে রেখে বলা হল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। তোমাকে রিমুভ করে দিয়ে তৃণমূল যুবা তৈরি করে অমুককে নিয়ে এলাম। সাতটা জেলার অবজার্ভার। তাকে বসিয়ে দেওয়া হল!’’
একই সঙ্গে শিশিরের দাবি, তৃণমূল এই বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হবে। ‘তৃণমূল গোল খাবে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে নিজের অতীত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শিশির বলেন, ‘‘যখন বামফ্রন্ট হেরে যাচ্ছে, তখন আমার সঙ্গে প্রণব মুখোপাধ্যায় ও অসীম দাশগুপ্তের কথা হচ্ছিল। অসীমবাবু প্রণব’দাকে বলছিলেন, শিশিরবাবু যা-ই বলুন, এবার আমরা ২৫৫টা আসন পাব। আমি বলেছিলাম, ২৫৫ নয়, গোল হয়ে যাবে! ওরা উধাও হয়ে গেছে! আজও বলছি, দিদিমণি, গোল!’’