রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেসের সর্বভারতীয় বাংলার ভোট প্রচারে যথা সময়ে আসবেন বলে বুধবার জানিয়েছিলেন দলের প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী। বৃহস্পতিবারই কংগ্রেস সূত্রে জানা গেল, রাজ্যে শেষ দু’দফার ভোটে প্রচারে আসতে পারেন রাহুল গাঁধী। তবে দিন ক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই ওই সূত্র জানিয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ঠিকঠাক থাকলে পশ্চিমবঙ্গের শেষ দু’দফার ভোটে প্রচারে আসতে পারেন দলের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গাঁধী। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতারা বাংলার ভোটে প্রচারে আসছেন না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে অধীর জানিয়েছিলেন, যথা সময়ে কংগ্রেসে শীর্ষ নেতারা প্রচারে আসবেন। সূত্রের খবর, রাজ্যের সপ্তম ও অষ্টম দফার ভোটে প্রচারে আসতে পারেন রাহুল। কেন শেষ দফা? জানা গিয়েছে, এখনও রাজ্য কংগ্রেসের যেটুকু দাপট রয়েছে তা মালদহ ও মুর্শিদাবাদে। তাই খুব ‘অঙ্ক’ কষেই ওই দুই জেলায় প্রচারে রাহুলকে পাঠানোর কমর্সূচি সাজিয়েছে এআইসিসি।
সপ্তাহখানেক জুড়ে বাংলার ভোটের প্রচারে অংশ নেওয়ার পর মঙ্গলবার দিল্লি ফিরে গিয়েছেন এ রাজ্যে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ। জানা গিয়েছে রাহুলের বাংলার ভোটের প্রচারসূচি ঠিক করতেই তিনি দিল্লি গিয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লি ফিরেই করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। তাই প্রচারসূচি সাজানোর প্রক্রিয়া কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা চতুর্থ ও পঞ্চম দফা থেকেই রাহুলকে প্রচারে চেয়েছিলেন। চতুর্থ দফায় আলিপুরদুয়ারে ভোট। সেখানে প্রার্থী হয়েছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দেবপ্রসাদ রায়। তাঁর প্রচারেই রাহুলকে প্রচারে আসতে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা করা সম্ভব হয়নি।
পঞ্চম দফায় কংগ্রেসের তিন বিদায়ী বিধায়ক লড়ছেন। উত্তরবঙ্গের জলপাইগু়ড়ির বিদায়ী কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন আমলা সুখবিলাস বর্মা, মাটিগাড়া-নকশালবাড়িতে শঙ্কর মালাকার ও ফাঁসিদেওয়াতে সুনীল তিরকে ল়ড়ছেন। এই বিধায়কদের জন্য রাহুল যাতে প্রচারে আসেন সে ব্যাপারেও দরবার করা হয়েছে এআইসিসিতে। কিন্তু এখনও সবুজ সঙ্কেত মেলেনি বলেই সূত্রের খবর। কিন্তু উত্তরবঙ্গের নেতারা শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ষষ্ঠ দফায় ভোট প্রয়াত কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির জেলা উত্তর দিনাজপুরে। সেখানও রাহুলকে আনার চেষ্টা হচ্ছে।
তবে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ভোটের প্রচারে যে রাহুল আসবেন তা একপ্রকার নিশ্চিত করছেন প্রদেশ নেতৃত্ব। নীলবাড়ির লড়াইয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিলয় প্রামাণিক বলেন, ‘‘রাহুলজি প্রচারে আসবেনই। কিন্তু কবে আসবেন সে বিষয়ে দিন ক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’
মুর্শিদাবাদ ও মালদহের মতোই কলকাতায় ভোট শেষ দুই দফাতেই। তাই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে চেষ্টা হচ্ছে, যাতে কলকাতাতেই সংযুক্ত মোর্চার নেতাদের উপস্থিতিতেই রাহুল একটি জনসভায় হাজির হন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সঙ্গে পার্কসার্কাস ময়দানে একটি জনসভাতে হাজির হয়েছিলেন রাহুল। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব রাহুলের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢ়রাকেও প্রচারে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর স্বামী রবার্ট বঢ়রার করোনা হওয়ায় তিনি নিজেকে নিভৃতবাসে রেখেছেন। যদিও প্রিয়ঙ্কার রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে। সে কারণে বাংলার ভোটের প্রচারে দেখা যাবে না প্রিয়ঙ্কাকে।