ফিরহাদ (ববি) হাকিম ও আব্বাস সিদ্দিকি।
আব্বাস সিদ্দিকি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ৩৬টা আসন ছেড়ে দেওয়ার দাবি করেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন আব্বাস। সোমবার এমন দাবি করলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। আব্বাস যদিও ফিরহাদের এই দাবি উড়িয়ে পাল্টা তাঁকে ‘ধোঁকাবাজ’ বলে মন্তব্য করেছেন।
সোমবার হুগলির চণ্ডীতলা বিধানসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী স্বাতী খন্দকারের হয়ে সেখানে প্রচারে গিয়েছিলেন ফিরহাদ। চণ্ডীতলায় তিনি বলেন, ‘‘এই যে পীরজাদা, তিনি আমার কাছে এসেছিলেন বোঝাপড়া করতে। আমাকে বলেছিলেন, ৩৬টি আসন ছেড়ে দিতে। কিন্তু আমরা রাজি না হওয়ায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়াই করছে। লড়াই করতে ময়দানে যখন নেমেছ, তখন লড়াই তো হবে।’’
যদিও ফিরহাদের এই দাবি পুরোপুরি খারিজ করে দিয়েছেন আব্বাস। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলেছেন, ‘‘যদি উনি এমন দাবি করে থাকেন, আমি বলব তিনি পুরোপুরি মিথ্যে বলছেন। উনি সবচেয়ে বড় মোনাফেক (ধোঁকাবাজ) আর মিথ্যুক। এমন ধোঁকাবাজ আর মিথ্যুককে যেন বাংলার মানুষ ভোট দেওয়ার ভুল আর না করেন। উনি মুসলিম সমাজকে বিভ্রান্ত করছেন। আসলে উনি গদ্দার।’’ আব্বাস আরও বলেন, ‘‘উনি মিনি পাকিস্তান না কি একটা কথা বলেছিলেন। এই কথা বলে উনি বিজেপি-কে টোপ দিয়ে এ রাজ্যে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। এমন কাজ করে তিনি এক জন গদ্দার হিসেবে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছেন।’’
চণ্ডীতলা থেকে খুব কাছেই ফুরফুরা শরিফ। জাঙ্গিপাড়া-সহ ওই এলাকার বেশ কিছু আসনে প্রার্থী দিলেও চণ্ডীতলা আসনটি সিপিএম-কে ছেড়ে দিয়েছে আইএসএফ। এই আসনে সংযুক্ত মোর্চার জোটের প্রার্থী হয়েছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। সেখানে দাঁড়িয়ে আব্বাসের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করায় ফিরহাদের উপর ক্ষুব্ধ জোটের নেতারা। বাম-কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে জোট আলোচনা এগোতে বড় ভুমিকা নিয়েছিলেন আব্বাসের ভাই তথা আইএসএফ-এর চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকি। আসন রফা নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়েছিল বলে তিনিও মানতে চাননি সোমবার। তাঁর কথায়, ‘‘যিনি এমন দাবি করেছেন, তিনি যদি তাঁর দাবির স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেন, তা হলে কথা দিচ্ছি, আইএসএফ বাংলার রাজনীতির ময়দান থেকে সরে দাঁড়াবে। আর যদি তিনি কোনও প্রমাণ দেখাতে না পারেন, তা হলে তিনি কী করবেন, সেটা যেন বলে যান। নেত্রী যেমন বাংলার মানুষকে ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছেন, তাঁর দলের নেতারাও যে মিথ্যা বলবেন এ আর নতুন বিষয় কী!’’