বিমান বসু
ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)-এর চিত্রনাট্য মেনেই ব্যান্ডেজ-প্লাস্টার মমতার পায়ে। নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ ভাবেই কটাক্ষ করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। বুধবার বিকেলে আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিটের সাংবাদিক সম্মেলনে প্রথমে তিনি বলেন, ‘‘পিকে-র বুদ্ধিতেই আহত হয়েছেন।’’ তার পরেই প্রশ্ন তোলেন, ‘‘চার-পাঁচ জন ধাক্কা দিলে কী ভাবে পায়ে আঘাত লাগতে পারে?’’
বাঁকুড়ার ওন্দার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী সিএএ রুখবেন বলে দাবি করেন। বিমানবাবু সে প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যিনি পিকের বুদ্ধিতে আহত হয়েছেন তার থেকে বাণী শুনতে হবে না। পায়ে ব্যান্ডেজ করে এমন অনেক কথাই বলছেন। যা এমনি সময় বলতেন না।’’ এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে লাগা আঘাত নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন বর্ষীয়ান ওই বাম নেতা। তিনি বলেন, ‘‘পায়ের ব্যান্ডেজটা তো খুলেছিল। প্লাস্টারটাও তো খুলেছিল। টেলিভিশনের পর্দায় আমি ছবিটা দেখেছি, লাল দাগ আছে। পিছন দিক থেকে চার পাঁচজন ধাক্কা দিলে কী আঘাত লাগে? কখনওই লাগতে পারে না। হাঁটুতে লাগতে পারে। কপালে লাগতে পারে। বুকে লাগতে পারে। কাঁধে লাগতে পারে। কিন্তু কখনও তা এই ভাবে লাগবে না। পিকের বুদ্ধিতে দুর্ঘটনা ঘটাতে গিয়ে একটু ভিন্ন রকমের দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। যা একটু বেশি ভোগাচ্ছে। আর তাই এখন আবালতাবোল বলতে শুরু করেছে।’’
বুধবার সকালেই দিনহাটায় বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি অমিত সরকারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কোচবিহারে বিজেপি নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। কাল একটি শিশু বোমার আঘাতে মারা গেছে। ঝাড়গ্রামে মারা গেছে। বাংলাটা কী বোমার ওপরে বসে আছে। এই সব মৃত্যুর দায় কে নেবেন? পায়ে ব্যান্ডেজ করা যিনি, তাঁকেই দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ তিনিই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনিই মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশমন্ত্রী। কত দফতরের মন্ত্রী বলতে গেলে সময় লেগে যাবে।’’ কিন্তু প্রশাসন এখন নির্বাচন কমিশনের আওতায়। তা হলে কীভাবে এই সব ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করা যায়? জবাবে বর্ষীয়ান বাম নেতা বলেন, ‘‘যদি প্রশাসন পুরোটাই কমিশন নিয়ে নেয়, তা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলা হচ্ছে কেন? এখনও তো সরকারি অর্ডারে ওঁকেই সই করতে হয়। নাকি দিল্লি সই করে দেয়। নির্বাচন কমিশন সই করলে তো আবার রিইমবার্সমেন্ট অব ফান্ড হবে না।’’
এখানেই ক্ষান্ত হননি বিমানবাবু। ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ তৃণমূলের এই স্লোগানকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘বাংলা বাংলার মেয়েকে চায়। কেউ যদি বলে বাংলা বাংলার ছেলেকে চায়। তা হলে বাংলার ছেলের মধ্যে কি আমি পড়ি? আমি তো বৃদ্ধ। আমি তো বুড়ো মানুষ। তাই আমার পরিচয়টা বাংলার ছেলে হিসেবে হবে না। আমি বাংলার একজন প্রবীণ বৃদ্ধ মানুষ। বাংলার মেয়ে দাঁড়িয়েছেন নন্দীগ্রামে। বাংলার মেয়ে তো মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। সে তো বাংলার মেয়ে। তাঁকে তো মেয়ে বলবে। যিনি ওঁর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, তিনি তো মেয়ে নন। তিনি বলে দিলেন আমি বীরভুমের মেয়ে। উনি জন্মেছেন কলকাতায়। কলকাতার স্কুলে পড়েছেন, কলকাতার কলেজে পড়েছেন। ওঁর মামারবাড়ি বীরভুমের রামপুরহাটের কুমুম্বাগ্রামে। মামাবাড়িতে মাঝেসাঝে যেতেন। ওখানে জন্মাননি, জন্মেছেন কলকাতায়। কলকাতার মেয়ে বললে কী অসুবিধা হত