তারাপীঠে পুজো সিআরপিএফ অফিসারের। নিজস্ব চিত্র।
তাঁর কাজ সুষ্ঠু ভাবে ভোট করানো। গোলমাল হলে ভোটাররা তাঁর এবং তাঁর বাহিনীর শরণাপন্ন হবেন। কিন্তু সেই তিনিই শরণাপন্ন হলেন তারাপীঠের মা কালীর। বৃহস্পতিবার ভোটের দিন জংলা ছাপের উর্দি পরেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর পদস্থ আধিকারিক দলবল নিয়ে তারাপীঠে গিয়ে পুজো দিলেন জাঁকিয়ে। সিআরপিএফের ওই কর্তার সঙ্গে পুজো দিতে গিয়েছিলেন তাঁর বাহিনীর সদস্যরাও। অস্ত্র-শস্ত্র নিয়েই ওই কর্তার তারাপীঠ দর্শন হয়েছে। তাঁর দর্শন এবং পুজো দেওয়ার ভিডিয়োও তুলে রেখেছেন তাঁর বাহিনীর সদস্যরা। সেই ছবিও ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমে।
কিন্তু কোনও আধিকারিক ‘কর্তব্যরত’ অবস্থায় এ ভাবে মন্দিরে দলবল নিয়ে পুজো দিতে যেতে পারেন কি? গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কমিশন। পাশাপাশিই, ওই ঘটনা নিয়ে টুইট করেছেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি লিখেছেন, ‘ভোটের ব্যস্ততম সময়ে আশ্রচর্য ভাবে সিআরপিএফের আইজি-কে তারাপীঠে পুজো দিতে দেখা গিয়েছে। উনি কি নিজের কাজ এবং দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত! এই ঘটনা সাধারণ মানুষের কাছে গভীর চিন্তার’।
প্রসঙ্গত, অষ্টম তথা শেষ দফার ভোটে বীরভূমেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বীরভূমে বরাবরই শাসক তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি-র কড়া টক্কর থাকে। যা শুরু হয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে। সেই কারণেই বীরভূম জয় করা বিজেপি-র কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে সুষ্ঠু এবং অবাধ ভোটগ্রহণের কারণে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে ‘নজরবন্দি’ করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি সেখানে ‘খেলা হবে’ বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর উচ্চপদস্থ আধিকারিকের ‘তারাপীঠ দর্শন’ যে বিরোধী বিজেপি-কে ক্ষুন্ন করবে এবং তদুপরি এমনিতে ওই বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অমিত শাহকে বিড়ম্বিত করবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়ে আসছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার তারা আরও ‘আগ্রাসী’ হবে বলেই মনে করছেন রাজ্যে প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ।